দিনক্ষণের হিসাব রাখার জন্য পিরিয়ড ট্র্যাকিং অ্যাপ

দিনক্ষণের হিসাব রাখার জন্য তৈরি পিরিয়ড ট্র্যাকিং অ্যাপগুলো দিয়ে আসল উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। সময়ের হিসাবে গড়বড় করার পাশাপাশি অনেক সময় হাস্যকর তথ্যও দিচ্ছে অ্যাপগুলো।

সম্প্রতি এক নারী সাংবাদিক অরলা বেরি তার আইফোনে ইনস্টল্ড সাইকেল ট্র্যাকিং অ্যাপের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেন। সেখানে এক নোটিফিকেশনে বলা হয়, আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো দিন তার পিরিয়ড শুরু হতে পারে। পোস্টটি দেখার পর আরও এক নারী জানান, অ্যাপে দেখানো হয় তার পিরিয়ড ৫৬ দিন দেরিতে শুরু হয়েছে।

স্মার্টওয়াচ ব্যবহারকারী এক পুরুষ জানান, তার ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেন্সট্রুয়েশন ট্র্যাকার চালু হয়। এরপর অনবরত তার নোটিফিকেশন আসতে থাকে। সেখানে বলা হয়, তার পিরিয়ড যথা সময়ে শুরু হয়নি।

অ্যাপগুলোতে পিরিয়ড শুরু হওয়ার দিন এবং শেষ হওয়ার দিনটি উল্লেখ করতে হয়। এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পিরিয়ডের তারিখ দেখা যায়। নারীদের পিরিয়ড চক্র নির্ভর করে মানসিক চাপ, বয়স ও হরমোনের তারতম্যের উপর। তাই প্রতিমাসেই তারিখ বদলাতে পারে। এটাই ধরতে পারে না পিরিয়ড ট্র্যাকিং অ্যাপগুলো।

অনেক অ্যাপের আবার কখন গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কখন থাকে না সে বিষয়েও তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও, কিছু অ্যাপ দেহের তাপমাত্রা, ঘুমের ধরণ, পিরিয়ডের সময় হওয়া ব্যাথা ও যৌন জীবনের তথ্যও ট্র্যাক করে।

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পোস্টডক্টোরেটের শিক্ষার্থী লরা সিমুল অনেক দিন ধরেই পিরিয়ড ট্র্যাকিং অ্যাপ নিয়ে পড়াশুনা করছেন। তিনি জানান, একটি অ্যাপ থেকেই সব তথ্য পাওয়া যায় না। পিরিয়ড ট্র্যাকিং অ্যাপ দিয়ে প্রেগনেন্সি ট্র্যাকিং অ্যাপের কাজ চলে না। পিরিয়ড চক্রের শুরু থেকে মেনোপোজ পর্যন্ত কাজে আসবে এরকম কোনো পূর্ণাঙ্গ নেই।

ওভুলেশন বা গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কখন বেশি থাকে তা জানতে আলাদা কিট দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। অ্যাপের দেওয়া অনুমান নির্ভর তথ্য তেমন কাজে আসে না।

গর্ভবতী না হওয়ার জন্য অনেকে ‘ন্যাচেরাল সাইকেলস’ অ্যাপটি ব্যবহার করেন। মার্কিন ফেডারেল ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন দেওয়া অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ৫ লাখ বার। মেনোপজের লক্ষণ সম্পর্কে জানাতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ক্লু নামের একটি অ্যাপ। এর ব্যবহারকারী সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ।