নানা পদের সেমাই রান্নার রেসিপি

ঈদের আনন্দ সেমাই ছাড়া ভাবাই যায় না! অনেকে আবার ঈদে দুধ সেমাই, সেমাইয়ের জর্দা, লাচ্ছা সেমাই, এমনকি ঝাল সেমাইও রান্না করে থাকেন। তাই আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে আজ জানিয়ে দিচ্ছি ঈদে আরো নানা পদের সেমাই রান্নার রেসিপি।

সেমাইয়ের মালাই ক্ষীর

উপকরণ:

দুধ-দেড় লিটার, চিনি-পরিমান মতো, মালাই-আধা কাপ, কাজু, কিসমিস, পেস্তা, কাঠবাদাম-আধা কাপ

সেমাই-এক কাপ, এলাচ, দারুচিনি-৬/৭, ঘি-২ টেবিল চামচ, জাফরান- সামান্য।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথমে বাদাম গুলো খোসা ছাড়িয়ে মোটা কুচি করে নিন। এরপর দের লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে অর্ধেকের কম পরিমাণ করে রাখুন। এবার প্যানে ঘি দিয়ে গরম করুন। এরপর এলাচ দারুচিনি দিয়ে একটু ভাজুন। এবার বাদাম কুচি, কিসমিস ও সেমাই দিয়ে দিন। মৃদু আঁচে হালকা ভাজুন। ঘ্রান ছাড়লেই ঘন দুধ দিয়ে দিন। নেড়ে নেড়ে রান্না করুন। সেমাই সিদ্ধ হয়ে আসার সাথে সাথে দুধ ঘন হয়ে আসবে। সেমাই সিদ্ধ হয়ে গেলে মালাই দিয়ে দিন। জাফরান দিন। এরপর ভালো করে মিশিয়ে চুলা বন্ধ করে ফেলুন। এবার ছোট ছোট বাটিতে এই ক্ষীর সাজান। এরপর ফ্রিজে রেখে সেট হতে দিন। সেট হলে বাদাম ও কিসমিস ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।

সেমাই জর্দা

কুলসন সেমাই -১ প্যাকেট, চিনি-২ কাপ, নারকেল কুড়ানো-১ কাপ, কিমমিশ-২ টেবিল চামচ, চীনা বাদাম (ভাজা)-৩ টেবিল চামচ, দারুচিনি-৩ টুকরো, তেজপাতা-২টা, ঘি-৪ টেবিল চামচ, পানি-২ কাপ, লবণ-পরিমানমতো।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথমে চুলায় কড়াই বসান। এরপর কড়াইতে ঘি দিয়ে গরম করুন। ঘি সামান্য গরম হলে ঘি দিন। এবার প্যাকেট সেমাইয়ের অর্ধেকটা ঘিয়ে ঢেলে দিয়ে ১০/১৫ মিনিট নাড়ুন যাতে সেমাইটা ঘিয়ে ভাজা হয়। এবার এতে কুড়ানো নারকেল দিয়ে নাড়তে থাকুন।কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে নাড়তে থাকুন। পানি শুকিয়ে আসলে বাদাম, কিশমিশ, তেজপাতা, দারুচিনি দিয়ে ১০ মিনিট জালে দমে রাখুন।সেমাই ঝরঝরে হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

লাচ্ছা সেমাই

উপকরণ:

তরল দুধ-২ লিটার, লাচ্ছা সেমাই-১ প্যাকেট, গুঁড়ো দুধ-৫ টেবিল চামচ, চিনি পরিমানমতো, এলাচ দারুচিনি ৬/৭ টি, লবণ এক চিমটি, কিসমিস পরিমানমতো, বাদাম কুচি পরিমানমতো, ঘি-দুই টেবিল চামচ, দুধের সর বা মালাই-আধা কাপ।

প্রণালি:

প্রথমে দুই লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে সোয়া এক লিটার করে ফেলুন। এরপর এলাচ দারুচিনি দিয়ে জ্বাল দিন। উপরে ঘন সর জমবে, সেটাকে তুলে রাখুন আলাদা করে। এবার দুধে চিনি মেশান। এরপর খানিকটা দুধ তুলে নিয়ে সেই দুধের মাঝেই পাউডার মিল্ক গুলিয়ে নিন। গোলানো গুঁড়ো দুধ আবার আসল দুধের সাথে মিশিয়ে দিন। এক চিমটি লবণ দিন। ব্যাস, তৈরি আপনার সেমাইয়ের জন্য গুঁড়ো দুধ।

এবার প্যানে ঘি গরম করুন। ঘিয়ের মাঝে লাচ্ছা সেমাই দিয়ে দিন। সঙ্গে বাদাম ও কিসমিসও দিয়ে দিন।এরপর খুব অল্প আঁচে ভাজবেন ঘিয়ের ফ্লেভারটা সেমাইতে যাওয়া পর্যন্ত। হালকা লাল হলেই নামিয়ে ফেলুন। নেড়েচেড়ে খুব ভালো করে ভাজবেন। এবার সেমাইটা বাটিতে সাজিয়ে নিন। এরপর ৪ ভাগের ৩ ভাগ গরম দুধ সেমাইয়ের ওপরে ছড়িয়ে দিন। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। দেখবেন সেমাই সমস্ত দুধ টেনে নিয়ে ড্রাই হয়ে গিয়েছে। এবার তুলে রাখা দুধের সর ওপরে ছড়িয়ে দিন এবং বাকি দুধটুকু দিন। একসঙ্গে পুরো দুধ দিয়ে ফেললে সেমাই পুরোটাই টেনে নেবে। ব্যাস হয়ে গেল অনন্য স্বাদের এক লাচ্ছা সেমাই।

ডিম সেমাই

উপকরণ:

সেমাই-৪ কাপ, ঘি আধা কাপ, এলাচ-৩টি, পানি-২ কাপ, ডিম-২টা, ধনে পাতা-২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি:

প্রথমে ডিম ফেটিয়ে লবণ মিশিয়ে একটি কাপে রাখুন। সেমাই ভেজে নিয়ে অন্য একটি পাত্রে রাখুন। এরপর অন্য পাত্রে গরম পানিতে এলাচ লবণ দিয়ে ঘিয়ে ভাজা সেমাই সিদ্ধ করে পানি শুকিয়ে আসলে ডিম দিয়ে নাড়ুন। ডিম জমাট বাঁধলে সেমাইর উপর ধনে পাতা ছিটিয়ে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। এই সেমাইটি ডায়াবেটিক রোগিদের জন্য উপযোগী সেমাই বটে।

দুধ সেমাই

উপকরণ :

সেমাই ২০০ গ্রাম (৪০০ গ্রামের প্যাকেট দিয়ে ছোট পরিবার দুই পদের সেমাই রান্না করা যায়), চিনি হাফ কাপ (আপনার ইচ্ছা কেমন মিষ্টি করবেন, খেয়াল করে), এলাচি ৩টা, দারুচিনি ৩ টুকরা, তেজপাতা ১টা, এক লিটার দুধ।

প্রণালি :

এক লিটার দুধ ভালো করে গরম করে কমাতে থাকুন, তাতে হাফ কাপ চিনি দিয়ে দিন (চিনি আপনার ইচ্ছার উপর)। এলাচি, দারুচিনি এবং থাকলে একটা তেজপাতা দিন। প্যাকেট থেকে সেমাই হাফ করে (২০০ গ্রাম) নিন। তার আগে খালি একটা গরম কড়াইতে সেমাইগুলো ভেজে নিন (তেল ছাড়াই ভাল, অনেকে তেল বা সামান্য ঘি দেন। ইচ্ছে হলে আপনিও দিতে পারেন)। মচমচে হলে তা গরম দুধে ঢেলে দিন। হালকা গরম থাকতেই পরিবেশন করুন।