‘ছেলে-মেয়েরা চাইলেও খারাপ সাইটগুলোতে যেতে পারবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঠ্যপুস্তকে তোমরা যে শিক্ষা পাও, সেটা পরীক্ষায় পাসের জন্য কাজে লাগে। কিন্তু পৃথিবী এখন শুধু পাঠ্যপুস্তক নির্ভর নয়। তোমরা যদি পাঠ্যপুস্তকের বাইরের জ্ঞান অর্জন না কর, তাহলে আজকের দুনিয়াতে চলা যাবে না। তোমাদের যদি আমরা জ্ঞান দিতে চাই, তাহলে তোমাদের হাতে জ্ঞানের উৎস দিতে হবে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় জ্ঞানের উৎসের নাম হচ্ছে ইন্টারনেট। গেলো দুই সপ্তাহে ইন্টারনেট থেকে ২০ হাজার খারাপ সাইট সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেছেন, এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে- আগামী ৬ মাস পর ছেলে-মেয়েরা ইচ্ছে করলেও আর ‘খারাপ সাইটে’ ঢুকতে পারবে না। ‘ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব আমার।’ যোগ করেন প্রযুক্তিমন্ত্রী।

সোমবার (১১ মার্চ) নগরের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ই-লার্নিং মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অভিভাবকদের বলছি- আপনারা ছেলে-মেয়েদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিন। আমি এ কারণেই বলছি- জ্ঞানের উৎসকে তালা মেরে জ্ঞানী হওয়া যায় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না দিলে জ্ঞানের বড় উৎস থেকেই বঞ্চিত হবে আমাদের সন্তানরা।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনামূল্যের বই বিতরণ করার সময় বলেছিলেন, ‘‘আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমার দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী ল্যাপটপ হাতে নিয়ে স্কুলে যাবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথা আমি বিশ্বাস করি। আমার দেশে যে ৪ কোটি শিক্ষার্থী আছে, তাদের হাতে যেভাবেই হোক একটা করে ডিজিটাল ডিভাইস আমরা দেবোই।

তিনি বলেন, দেশের ৭১০টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার ল্যাব তৈরির কাজ চলছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও ২৫ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে। আমার দেশে এমন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকবে না, যেখানে কম্পিউটার ল্যাব হবে না। এমন কোনো ক্লাসরুম থাকবে না, যেখানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম হবে না। এমন কোনো শিক্ষার্থী থাকবে না, যে ল্যাবে পড়াশোনা করবে না।

প্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ৬৪০টি স্কুলে ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিগত জ্ঞান পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশুনা শেষ করে বেকার না থাকে। কিছু একটা করতে পারে।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি এখন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। কদিন পর এমন অবস্থা হবে, আমরা গাড়ি দেখবো, কিন্তু সেখানে চালক থাকবে না। হাঁটতে গিয়ে নিজের সঙ্গে লাগা ব্যক্তিটিকে যখন সরি বলতে যাবো, দেখা যাবে সেটি রোবট। এ জন্য শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনে যাতে কোনো সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, তা নিশ্চিত করবো।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেসিপ এর যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক মো. আবু ছাইদ শেখ, ইএটিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মুবিন খান, সেসিপ এর পরামর্শক একেএম শামসুল হক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আজিজ উদ্দিন এবং নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম হোসাইনী।