ঢাকা টেস্টে টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়

প্রথমবারের মতো কোনো টেস্ট ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনেই ইনিংস ও ১৮৪ রানের বিশাল জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এতে দুই ম্যাচ সিরিজে ক্যারিবীয়দের ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করল সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দল।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৫০৮ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস গুটিয়ে যায় ১১১ রানে। তাই ৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনের ফাঁদে পড়ে তাদের ফের ব্যাটিংয়ে নামতে হয়। রবিবার দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নেমেও তারা ২১৩ রানের বেশি করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ ইনিংস ও ১৮৪ রানের এই বিশাল জয় পায়।

বাংলাদেশের স্পিনারদের কাছে অসহায় ছিল ক্যারিবীয়রা। বিশেষ করে দুই ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ একাই ধ্বসিয়ে দেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইন। তার সঙ্গে প্রথম ইনিংসে সাকিব ও দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল সহায়ক ভুমিকা রাখেন।

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি এবং সাকিব-লিটনের হাফসেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাটিং কর বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ১৩৯, সাকিব ৮০ ও লিটন ৫৪ রান করেন। ব্যাটের পর বলেও স্পিনারদের ঘুর্ণিতে কাঁপতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রবিবার দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়। এরপর মাঠে নেমে মাত্র ২৯ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরে ৫ উইকেটে ৭৯ রান করে দিনের খেলা শেষ করে ক্যারিবীয়রা।

সেখান থেকে রবিবার সকালে ফের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ১১১ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের সর্বনিম্ন ইনিংস। এতে বাংলাদেশ লিড পায় ৩৯৭ রানের। দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষকে ফলোঅন করানোর সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগে ২১৮ রানের লিড নিয়ে ফলোঅনের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগায়নি টাইগাররা। তবে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরপর দ্বিতীয়বারের ব্যাটিংয়ে পাঠান সাকিব আল হাসান। এর মাধ্যমে টেস্টে প্রথম কোনো দলকে ফলোঅন করাল বাংলাদেশ।

ফলোঅনের ফাঁদে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও শিমরন হেটমায়ের ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো ব্যাটসম্যান ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ৯৩ রান করেন হেটমায়ের। আর ক্যারিবীয়রা রবিবার তৃতীয় দিনেই দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রান করে গুটিয়ে যায়। তাই বাংলাদেশ বড় জয় পায়। মিরাজ প্রথম ইনিংসে ৭টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি উইকেট নেন। অপরদিকে দুই ইনিংসে সাকিব চারটি ও তাইজুল তিনটি করে উইকেট নেন। মিরাজ ম্যাচসেরা ও সাকিব সিরিজ সেরার পুরস্কার পান।