যেভাবে সাগরে ভেসে ৪৯দিন বেঁচে ছিলো এক তরুন

হিউম্যান ২৪ ডেস্ক:   ইন্দোনেশিয়াতে সাগরে নোঙর করে কাঠের তৈরি ভেলায় বাতি জ্বালিয়ে রাতে মাছ ধরার চল রয়েছে বহুদিন ধরে। ইন্দোনেশিয়ায় এ ধরনের ভেলাকে বলা হয় রমপং। এই ধরনের একটি ভেলায় ঝড়ের কবলে পড়ে গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যায়। ৪৯দিন ভেসে থাকা এই ভেলার আরোহি এক যুবককে উদ্ধার করেছে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ।

প্রতি সপ্তাহে এই ধরনের ভেলায় প্রয়োজনীয় খাবার, পানি এবং জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। একই সাথে ডাঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হয় শিকার করা মাছ। রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ভেলার ওপর ছাউনি দেওয়া একটি কুঁড়ে ঘর বানানো থাকে ঐ ভেলায়।

জুলাই মাসের মাঝামাঝি তেমনি একটি রমপংয়ে মাছ ধরছিলো ইন্দোনেশিয়ার সুলাওসি দ্বীপের ১৯ বছরের তরুণ আলদি নোভেল আদিলাং। কিন্তু ১৪ই জুলাই এক ঝড়ে তার ঐ ভেলার নোঙর ছিঁড়ে গেলে চরম বিপদে পড়ে যায় ঐ তরুণ।। গভীর সাগরে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভাসতে থাকে তার মাছ ধরার ঐ ভেলা।

ভাসতে ভাসতে কয়েক হাজার কিলোমিটার দুরে চলে যায় আদিলাংয়ের ঐ ভেলা। ৪৯ দিন পর গুয়াম দ্বীপের কাছে পানামার একটি পণ্যবাহী জাহাজ তাকে উদ্ধার করে।
যেভাবে বেঁচে ছিল আদিলাং?

এই ৪৯ দিন আদিলাং কিভাবে বেঁচে ছিল – জাকার্তা পোষ্ট পত্রিকাকে তা বলেছেন ইন্দোনেশীয় কূটনীতিক ফাজার ফিরদৌস। ভেলার ওপর কুঁড়েঘরের কাঠ ভেঙে ভেঙে তা দিয়ে সাগরের মাছ ধরে সেদ্ধ করে খেয়েছে সে। জমা করা পানি ফুরিয়ে গেলে দিনে পর দিন সাগরের পানি খেয়েছে।

“ভয়ে সিঁটকে থাকতো, প্রায় কান্নাকাটি করতো, জাহাজ দেখলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতো কিন্তু লাভ হতোনা। “১০টিরও বেশি জাহাজ তার ভেলার কাছ দিয়ে চলে গেছে, কিন্তু কেউ থামেনি, কিম্বা তাকে দেখেনি।”জাকার্তা পোষ্ট পত্রিকাকে বলেছেন ইন্দোনেশীয় কূটনীতিক ফাজার ফিরদৌস।

পরে ৩১শে অগাস্ট এমভি আরপিগিও নামে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ গুয়াম দ্বীপের কাছে তাকে উদ্ধার করে।
জাহাজের ক্যাপ্টেন গুয়ামের উপকূলরক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আদিলাংকে জাপানে নিয়ে যেতে বলা হয়। ৬ই সেপ্টেম্বর তাকে জাপানে নেওয়া হলে, ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের সহযোগিতায় দু’দিন পর দেশে ফিরে যায় আদিলাং।