পুলিশের তৎপরতায় অস্ত্রসহ ৪ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

আবু সাঈদ ভূঁইয়া, মিরসরাই :: ফয়সাল ইকবাল নামের এক যুবক চট্টগ্রামে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। করোনা পরিস্থিতির কারনে গণপরিবহন না পেয়ে চলতি একটি প্রোবক্স প্রাইভেট গাড়ীতে যাত্রা শুরু করেন মিরসরাইয়ের কমলদহ এলাকা থেকে। পথিমধ্যে গাড়িতে থাকা যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীরা তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে মারধর করে ফেলে দেয় গাড়ি থেকে। যুবক ফয়সাল বিষয়টি দ্রুত পুলিশকে জানালে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের দ্রুত তৎপরতায় ধরা পড়ে ওই ৪ ছিনতাইকারী। এসময় জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত প্রোবক্স প্রাইভেট কার ও উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশী পিস্তল, ৪রাউন্ড গুলি ও ছিনতাইকৃত মালামাল। রবিবার (৩১ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার নিজামপুর সরকারি কলেজের সামনে পুলিশের চেকপোষ্টে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সীতাকুন্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের মহানগর এলাকার স্বপন কুমার শীলের পুত্র হৃদয় কুমার শীল (২৩), একই উপজেলার নুনাছড়া এলাকার আমান উল্লাহর পুত্র নিজাম উদ্দিন (২৫), কালুশাহ এলাকার জামাল উদ্দিনের পুত্র রাহাদুল আলম (২৫) ও ভাটিয়ারি এলাকার মাঝি বাড়ির মৃত শফিউল্লাহর পুত্র বিল্লাল হোসেন ওরফে আসলাম (২৮)। এরা সবাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবেশে লোকজনকে গাড়িতে তুলে ছিনতাই করে থাকে। ভুক্তভোগী ফয়সাল ইকবাল জানান, রবিবার দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে চট্টগ্রাম শহরে আমার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার ছোটকমলদহ এলাকা থেকে একটি ছোট প্রাইভেটকারে উঠি। কারের মধ্যে চালক ছাড়া আরো ৩জন যাত্রী ছিল। সীতাকুন্ড বাজারের উত্তর পাশে যাওয়ার পর গাড়ির ভেতর থাকা যাত্রীদের একজন হটাৎ আমার নাকে একটি ঘুষি মারে। এরপর আমার নাক থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। আমি জিজ্ঞেস করি আমাকে মারলেন কেন? তারা আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে বলে তোর কাছে যা আছে সব দিয়ে দে। এরপর আমার কাছে থাকা নগদ ৪৫০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে কুমিরা এলাকার রোজ গার্ডেনের সামনে গাড়ি ঘুরিয়ে আমাকে রাস্তার পাশে নামিয়ে দেয়। আমি গাড়ির নম্বর মুখস্ত করে স্থানীয়দের সাহয্যে সীতাকুন্ড থানা ও হাইওয়ে পুলিশকে ফোন দিলেও কোন সহযোগীতা পাইনি। পরে মিরসরাই থানার ওসিকে ফোন দেয়ার পর তিনি তিনি ছিনতাইকারীদের আটক করেন এবং আমার টাকা, মোবাইল উদ্ধার করেছেন। দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় আমি ওসি স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ। এই বিষয়ে মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান পিপিএম বলেন, রবিবার বিকেলে ফয়সাল ইকবাল নামে একজন আমাকে ফোন দিয়ে সে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছে মর্মে তথ্য এবং ছিনতাকারীদের বহন করা গাড়ির নম্বর দেয়। আমি সাথে সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কয়েকটি স্পটে পুলিশী টহল জোরদার করি। নিজামপুরে আগে থেকেই আমাদের একটি চেকপোষ্ট রয়েছে। ছিনতাকারীরা বুঝতে পেরে চেকপোষ্টের একটু আগে গাড়ি থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় একজন পালিয়ে গেলেও ৪ ছিনতাইকারীকে পুলিশ আটক করে। গাড়ি তল্লাসী করে একটি বিদেশী পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। তাদের ব্যবহত গাড়ি (ঢাকা মেট্রো খ- ১২-৭৮৭৯) থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাঁরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিভিন্ন গাড়িতে যাত্রীবেশে থেকে অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন থানায় আগে মামলা রয়েছে কি না খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।