উপমহাদেশের নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ১৪৫ তম জন্ম ও ৯৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা শাখার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) নগরীর আমবাগান এলাকায় আয়োজিত এই স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহবায়ক জোবায়ের বীনা। আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সুপ্রীতি বড়ুয়া, রেশমা আক্তার, ওনুফা বেগম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় সঞ্চালনা করেন মহিলা ফোরাম সদস্য উম্মে হাবিবা শ্রাবণী।

সভায় বক্তারা বলেন, “প্রায় দেড়শত বছর আগে পরাধীন দেশে জন্মগ্রহণ করে বেগম রোকেয়া বুঝেছিলেন সমাজে নারীর অধিকার ও মর্য়াদা প্রতিষ্ঠা না হলে, সমাজেরও মুক্তি আসবে না। ছোটবেলা থেকে পারিবারিক নানান বাধাবিপত্তির মধ্যেও শিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগ ও একাগ্রতা তাকে দমাতে পারে নি। মাত্র ২৯ বছর বয়সে বিধবা হয়ে পরবর্তী জীবনে নারী শিক্ষা বিস্তারে আমরণ নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।এর জন্য সমাজে পুরুষতান্ত্রিক বাঁধা, লাঞ্চনা গঞ্জনার মধ্যেও তিনি নারীশিক্ষায় ব্রতী হন।বেগম রোকেয়া সাহিত্য রচনায় সমাজের নানা কলুষতা,অন্ধবিশ্বাস, কূপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে সমাজে নবজাগরণ ঘটিয়েছিলেন।
আজ স্বাধীন দেশেও নারীরা পুরুষতন্ত্র ও পুঁজিবাদী ভোগমানসিকতার নিগড়ে পরাধীন হয়ে আছে।সমাজে নারী নির্যাতন, নিপীড়ন ও ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। ঘরেবাইরে কোথাও নারী নিরাপদ নয়। দেশের লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস, গৃহশ্রমিক তাদের মানসম্মত ন্যূনতম মজুরি, মর্যাদা ও অধিকার নেই। গৃহস্থালি কাজের নেই রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক স্বীকৃতি। সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে ক্রমাগত বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ এর গণভ্যুথানে যে নারীরা ছিলো সমুখ সমরে,পরবর্তী সময়ে তাদেরকে অপমান, অপদস্ত ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তি নারীকে ঘরে বন্দী করে রাখার মধ্যযুগীয় আক্রমণ করে চলেছে। এমতাবস্থায় নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার জীবন ও সংগ্রাম মুক্তির পথ দেখাবে। নারীমুক্তি ও সমাজ প্রগতির ঐক্যবদ্ধ লড়াই পরিচালনা করে আগামীদিনের বৈষম্যহীন,মানবিক ও সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই আজ সময়ের দাবি।











