মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: ৮ ডিসেম্বর মিরসরাই মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মিরসরাই অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়েছিল। ওই দিন মিরসরাইয়ের মুক্তিকামী জনতা পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হটিয়ে দিয়ে মিরসরাইকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন।

স্মৃতিচারন করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই মিরসরাইয়ের প্রায় এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। কিন্তু কিছু পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা তখনও থানা সদরে অবস্থান করছিল। তাদের আস্তানা ছিল মিরসরাই উচ্চ বিদ্যালয় (বর্তমান মিরসরাই মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়) ও মিরসরাই থানায়। সেই কারনে মিরসরাই এলাকাকে শত্রমুক্ত ঘোষণা করা যাচ্ছিলো না।
অবশেষে এল সেই কাংখিত ৮ ডিসেম্বর। মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেলেন পাকসেনারা মিরসরাইয়ের অয়্যারলেস ভবনটি (বর্তমান টিএন্ডটি ভবন) ধ্বংস করে থানা সদরে অবস্থান করছে। এই সংবাদ মুহূর্তের মধ্যেই মিরসরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কানে পৌঁছে যায়। যোদ্ধারা থানার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সংগঠিত হয়ে পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শুরু হয় যুদ্ধ। কতক্ষণ যুদ্ধ হয়েছিল ঠিক মনে নেই। এক সময় পাকসেনারা পিছু হটে। মুক্ত হয় মিরসরাই। চারদিক থেকে জয়বাংলা শ্লোগান নিয়ে মুক্ত মানুষের জোয়ারে মিরসরাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ জনসমুদ্রে পরিনত হয়।
মৌলভী শেখ আহাম্মদের কোরআন তেলাওয়াতের পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ছাত্রনেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা মিরসরাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের সময় যুদ্ধ চলাকালীন মিরসরাই থানার ডিপুটি কমান্ডার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম জাফরউদ্দিন আহাম্মদ চৌধুরী ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন এএফএম নিজাম উদ্দীন, মো. নিজাম উদ্দীন (শিক্ষক মলিয়াইশ উচ্চবিদ্যালয়), মো. আবু তাহের (সাবেক চেয়ারম্যান মিঠানালা ইউনিয়ন), আর্মি সফিসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা জনতা। জয়বাংলা শ্লোগানে মুখরিত করে তখন আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয় আজ থেকে (১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর) মিরসরাই শত্রুমুক্ত ভূখন্ড।










