চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের পাশে বালুর ব্যবসা: বাতাসে উড়ে ধুলোবালি ঘটছে দুর্ঘটনা

শফিউল আলম, রাউজান ঃ চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক দখল করে চলছে বালুর রমরমা বাণিজ্য। রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে পশ্চিম গহিরা সত্তারঘাট এলাকায় এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। সড়কের উপর বালু উঠা নামার কারণে বেড়েছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে দেখা গেছে, হালাদা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে স্তুপ করছে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের পাশে। সড়কের রাউজান অংশের হালদা ব্রীজ সত্তারঘাট হতে পশ্চিম গহিরা এলাকা পযর্ন্ত অন্তত ১০টি পয়েন্টে প্রকাশ্যে চলছে এই বাণিজ্য। স্তুপ করা বালু বিক্রি করছে ট্রাক ও চাঁদের গাড়ী (জীপ) যোগে। এছাড়া এই মহাসড়কে রাউজান অংশে বাইন্না পুকুরপাড় এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে সড়কের পাশে ইট- বালু ও পাথরের ব্যবসা করে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ইট-বালু রেখে সাব-ঠিকাদারির ব্যবসাও করছেন তাঁরা। এ কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশ সরু হয়ে গেছে। তাই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, হালদা থেকে উত্তোলন করা পানিসহ বালু স্তূপ রাখার ফলে নষ্ট হচ্ছে সড়ক। এই স্তূপ থেকে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে ধুলাবালু। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে পথচারী ও স্থানীয়রা।এছাড়া প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।অনুসন্ধানে জানা যায়, সড়কের ওপর বালু ব্যবসায় জড়িত ২০-৩০ জনের চক্র। তাদের পৃথক বালুমহাল রয়েছে। হালদার বিভিন্ন স্পট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে মহাসড়কের ওপর রেখে তারা চালিয়ে যাচ্ছেন এ রমরমা ব্যবসা।

এতে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বড় রাজস্ব আয় থেকে।ইউনুচ সুফিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও হামদু মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সড়কের পাশ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে বাতাসে উড়ে এসে চোখে-মুখে পড়ছে বালু। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হাঁচি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া বালুর কারণে পথচারীরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে।স্কুলছাত্রী উম্মে হাবিবা কুসুম বলেন, সড়কের ওপর বালুর ব্যবসার কারণে ধুলো-বালিতে সয়লাব পুরো স্কুল। আমাদের অনেক সহপাঠী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ব্যবসা বন্ধ হওয়া দরকার।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামদু মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, আমাদের স্কুলের পাশ ঘেঁষে অবৈধ বালুর রমরমা ব্যবসা চলছে। এতে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ধূলি-বালিতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা কোমলমতি শিক্ষার্থীর বাঁচাতে চাই। প্রশাসনের কাছে দাবি করছি, অবিলম্বে সড়কের ওপর বালুর ব্যবসা বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার।

এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলণ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা দেওয়া হয়েছে। হালদা নদী থেকে যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়ক দখল করে বালুর ব্যবসা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।