চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক দপ্তর (OIA) ও ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (IQAC) এর সহযোগিতায় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা সমাজ (CURHS) এর সহায়তায় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ অর্জন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে এগিয়ে যাওয়া: একজন মাইক্রোসফট প্রকৌশলীর দৃষ্টিভঙ্গি” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর এস. এম. নসরুল কদির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবি আন্তর্জাতিক বিষয়ক দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার অনুষ্ঠান আয়োজকসহ উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান। তিনি বলেন. আপনারাই আগামী প্রজন্মের দূরদর্শী নেতা, অগ্রগামী গবেষক এবং নবপ্রবর্তিত প্রযুক্তিবিদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বব্যাপী প্রভাব ও ঐতিহ্য আপনাদের সাফল্যের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত হবে। উপাচার্য আজকের আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ অর্জন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে এগিয়ে যাওয়ার কলা-কৌশল সম্পর্কে ধারণা পাবেন মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বৈশ্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর এস. এম. নসরুল কদির আন্তর্জাতিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী একাডেমিক সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাইক্রোসফট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ইন্তিসার রাজোয়ান পরাশ। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অভিজ্ঞতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপ্লবী প্রভাব সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক তাহমিদা খানম।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ইন্তিসার রাজোয়ান পরাশ তার বক্তব্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে বিভক্ত করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের সুযোগ- এ অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া, স্কলারশিপের যোগ্যতা, অতিরিক্ত পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক সুবিধা, এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান- এ অংশে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান প্রভাব, বিভিন্ন শিল্পখাতে এর ভূমিকা, এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য AI সম্পর্কিত দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংক্ষেপে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
সেমিনারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মিলিয়ে বিপুল সংখ্যক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। যারা বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা পেতে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক দপ্তরের প্রথম উদ্যোগ, যা অসাধারণ সফলতা অর্জন করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও কর্মশালার জন্য শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
সেমিনারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে ব্যাপক দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ আবেদন, আর্থিক সহায়তা ও সফল একাডেমিক ক্যারিয়ারের জন্য কৌশলগত প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আলোচনা শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক হয়েছে এবং ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করেছে।
এ ধরনের সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও চাকরির বাজারে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে আরও এ ধরনের জ্ঞানভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সুযোগের দ্বার উন্মোচন ও প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে চবি প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।