চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রধান শিক্ষককে হেনস্তা ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় নিন্দাজ্ঞাপন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান মব সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক লাঞ্ছনা বন্ধ হোক’, ‘শিক্ষক হেনস্তাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হোক’, ‘মব কালচার বন্ধ হোক।’
সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং ভুক্তভোগী শিক্ষককে যথাযোগ্য মর্যাদায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানান চবি শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া নাট্যকলা বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা দাশ বলেন, ‘আমরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছি শিক্ষক হেনস্তা ও মব কালচারের বিরুদ্ধে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই দাবি জানাচ্ছি যে, মব তৈরি করে যেভাবে শিক্ষক হেনস্তা করা হচ্ছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক ও মবকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। শিক্ষকের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হোক।’
সংস্কৃত বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী প্রবীণ সেন বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী ভাবনা আচার্যের পিতা কান্তিলাল আচার্য, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। গত ৩৫ বছর ধরে তিনি শিক্ষকতার পেশার সঙ্গে জড়িত। আমাদের জানামতে তিনি এমন কিছু করেননি যা রাষ্ট্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল তাকে মবের মাধ্যমে যেভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হলো তাতে এই ঘটনা শিক্ষক হেনস্তার চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছে।’
বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা ভাবনা আচার্যের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে ঘটনাটি বিস্তারিত জানার পর আমরা দেখলাম কান্তিলাল আচার্য বলছেন তিনি কোনো দুর্নীতি করেননি। কিন্তু মব বলছিলো দুর্নীতি না করলেও তাকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এই অন্যায়ের বিচার আমরা চাই।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের প্রতি মব প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী হাজী তোবারক আলী চৌধুরী (টিএসি) উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আচার্যকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করানোর ঘটনা ঘটে।