চট্টগ্রামে যৌতুকের দাবিতে ৮ মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী সুমনকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদেণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দণ্ডিত সুমন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে সুমন ও মনি আক্তারের বিয়ে হয়। তবে সুমন তার আগের একাধিক বিয়ের কথা গোপন রাখেন। বিয়ের পর থেকেই সুমন স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। মনি আক্তার হালদা ভ্যালি চা বাগানে কাজ করতেন এবং তার আয় থেকে স্বামীকে একটি মোটরসাইকেল ও ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর সুমন তার স্ত্রী মনি ও মামাতো ভাই টিপুকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান এবং সেখানে শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক দাবি করেন।
শ্বশুর যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপরের দিন ৩১ অক্টোবর ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মনিকে তার পৈতৃক বাড়ি ভুজপুরে নিয়ে আসে সুমন। সেখানে গিয়ে টাকা চেয়ে না পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার পথে আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয় এবং স্ত্রীকে মারধর করেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনি মারা যান। এ ঘটনায় মনির ভাই আব্বাস বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামি এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭। এরপর সুমন দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় এবং ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার এই রায় দেওয়া হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বলেন, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সুমনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।