চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (সিইপিজেড) জেএমএস ও ম্যারিনকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন নারীসহ অর্ধশত শ্রমিক। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিইপিজেড এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাজিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার জেরে দুটি কারখানা আগামী ৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সিইপিজেড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকাল ৩টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর শেখ গোলাম রবি।
প্রত্যক্ষদর্শী আলী আহমেদ জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে জেএমএসের শ্রমিকরা বাৎসরিক ৯ শতাংশ বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছিলেন।
দু’দিন বন্ধ থাকার পর বিষয়টির সুরাহা হয়। শনিবার ফের কারখানাটি চালু হয়। অন্যদিকে সকালে ম্যারিনকোর শ্রমিকরা দাবি আদায়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। সে সময় তারা ঢিল ছুড়ে সংলগ্ন জেএমএস কারখানার কয়েকটি জানালার কাঁচ ভাঙলে দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।
এ সময় অনেকের হাতেই লাঠিসোঁটা দেখা যায়। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। দুই পক্ষের মধ্যে আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আরেক শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য দুই কারখানার শ্রমিকরা অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন।
এর মধ্যে জেএমএস কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলেও শনিবার সকাল থেকে তারা কাজে যোগ দেয়। এ সময় ম্যারিনকো কোম্পানির একদল শ্রমিক জেএমএস কারখানায় ঢুকে ভাঙচুরসহ কর্মরত শ্রমিকদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এতে নারী শ্রমিকসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর শেখ গোলাম রবি কালের কন্ঠকে বলেন, আগে থেকে দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সমস্যা চলছিল। গত শনিবারও তারা হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়েছিল। সেটার জের ধরে মুলত আজকে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এখন (বিকাল ৩টা) পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, কারখানার মূল গেট খোলা নিয়ে এক কারখানার শ্রমিকের সঙ্গে আরেক কারখানার শ্রমিকের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই তাদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত। এসময় একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঢিল ছুঁড়তে থাকে। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন। আমরা অনেককে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল ও বেপজা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের খবর পাইনি।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান গণমাধ্যমকে বলেন, জেএমএস এবং ম্যারিনকো কারখানা দুটো সিইপিজেডের এক নম্বর সড়কে। মূলত শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সংঘাতের সূত্রপাত। দুই পক্ষের মালিকরা শ্রমিকদের বুঝিয়েছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কারখানা দুইটি আগামী ৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।