শফিউল আলম, রাউজানঃ রাউজানের নোয়াজিশপুরে সোলার সেচ প্রকল্পের মালামাল উধাও প্রকল্পের আওতায় ৫০ একর জমির বোরো ধানের চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে ইউনিয়নের ফতেহ নগর মিলন মাস্ট্রার ঘাটা এলাকায় সর্তা খালের পাড়ে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের অধীনে বসানো হয় সৌর সেচ প্রকল্প বিগত ২০১৮-১৯ সালে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল কৃষকদের পানি সংকট মোকাবিলায়। তখন এই প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছিল ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ২২৮ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের অধীনে রাউজানের নোয়াজিশপুরের ফতেহ নগর, পাশ্ববর্তী ফটিকছড়ি উপজেলার আবদুল্লাহ পুর ইউনিয়নের গণিপাড়া, আবদুল্লাহপুর এলাকায় ৫০ একর জমিতে শুস্ক মৌসুমে বোরো ধানের চাষাবাদ করতে এলাকার কৃষকরা । এই সেচ প্রকল্পের অধীনে উপকারভোগী ছিল রাউজান-ফটিকছড়ির শত শত কৃষক বোরো ধানের চাষাবাদ করতো। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায় প্রকল্প কাজ শেষ করে বিএডিসি চুক্তিভিত্তিতে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয় নোয়াজিশপুরের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলমকে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে গত বছর পর্যন্ত কৃষকদের ক্ষেত খামারে পানি দিয়ে আসছিলেন টাকার বিনিময়ে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পরপরই এই প্রকল্পের সেচ পাম্পসহ সব যন্ত্রপাতি রাতের আঁধারে খুলে নিয়ে যায় দুবৃত্তরা। এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে আলম মেম্বার বলেন, গত বৎসরের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরপর আমি এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে আসি। এই সুযোগে কে বা কারা সৌর প্রকল্পের মোটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে গেছে। একটি ধাতব মই ছিল। সেটিও ছাড়েনি। সবকিছুই চুরি করে নিয়েছে। তিনি দাবি করেন, প্রকল্পের যন্ত্রপাতির সঙ্গে আমার নিজেরও দুটি মোটর ছিল। সেগুলোও চুরি করে নিয়ে যায়।
ফটিকছড়ির আবদুল্লাহপুর এলাকার কৃষক ইসহাক বলেন, আমরা এই সেচ প্রকল্পের পানি দিয়ে জমিতে নানারকম ফসল উৎপাদন কওে আসছি। এখন শীতকাল। বোরো ধানের মৌসুম চলছে। সঠিক সময়ে পানির অভাবে এবার ধান চাষ করা অনিশ্চিত।এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, ওই প্রকল্পের সঙ্গে আমাদের তেমন একটা সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকল্পটির সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব বিএডিসির। অবশ্য গত বছরের ২৭ আগস্ট মোহাম্মদ আলম নামের একজন আমার দফতরে প্রকল্পের যন্ত্রপাতি চুরির বিষয়ে লিখিতভাবে জানায়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বি,এ,ডি,সি) রাউজান উপজেলা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের কাছে ফোন করে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বি,এ,ডি,সি) রাউজান উপজেলা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নোয়াজিশপুর সোলার সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার সাবেক মেম্বার আলম এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে যায় । ঐ সময়ে সোলার সেচ প্রকল্পের মালামাল গুলো দুবৃত্তরা চুরি করে নিয়ে যায় ।
পরবর্তী বিষয়টি সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ আলম আমাকে জানালে, আমি এ বিষয়ে রাউজান থানায় জিডি করতে বলি। সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার সোলার সেচ প্রকল্পের মালামাল উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়ে রাউজান থানায় জিডি করেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বি,এ,ডি,সি) রাউজান উপজেলা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, আমি সরজমিনে পরিদর্শন করে সোলার সেচ প্রকল্পটি চালু করার বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছি । আবেদন করার দুইমাস অতিবাহিত হলে ও এখানো কোন বরাদ্ব পায়নি। বরাদ্ব পাওয়া গেলে সোলার সেচ প্রকল্প চালু করা হবে । সরেজমিন দেখা যায়, প্রকল্পের মূল মোটর সর্তা খালের পাড়ে একটি পাকা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখা থাকলেও বর্তমানে সেটি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে আছে। কৃষিজমিতে পানি দেওয়ার লাইনে থাকা ধাতব যন্ত্রগুলোও উধাও হয়ে গেছে। সোলার সেচ প্রকল্পের মালামাল উধাও হয়ে যাওয়ায় শতাধিক কৃষক ফটিকছড়ির আবদুল্লাহ পুর, গণী পাড়া, রাউজানের নোয়াজিশপুরের ফতেহ নগর এলাকায় ফসলী জমিতে সেচের অভাবে বোরো ধানের চাষাবাদ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।