‘পেটে লাথি মারার নীতি আর নয় এবার জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা দাও’

নীতিমালা প্রনয়ণ, লাইসেন্স প্রদান ও রুট পারমিট প্রদানের দাবিতে সমাবেশ
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে নীতিমালা প্রনয়ণ, লাইসেন্স প্রদান ও রুট পারমিট প্রদান সহ ৮ দফা দাবিতে নগরে পুরাতন বটতলী রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে ২৮ ডিসেম্বর(শনিবার) বিকাল ৩টায় সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য আহমদ জসিম এর সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক ও বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়। বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব মনির হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলা আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন কবির, সদস্য সচিব আকরাম হোসেন, ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ পতেঙ্গা থানার সদস্য মো মাসুদ, নুর মোহাম্মদ, নাসির উদ্দিন, খুলশী থানার সদস্য সচিব মো ইব্রাহিম খলিল, মো রাকিব, সমাজতন্ত্রিক ছাত্র ফন্ট, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন এবং উপদেষ্টা মহিন উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন,” আমরা যারা জীবন ও জীবিকার তাগিদে ইজিবাইক ও ব্যাটারি রিকশা চালাই তারা সবাই শ্রমজীবী মানুষ ও এই নগরীর বিভিন্ন পরিষেবা বাবদ ট্যাক্স দিয়ে থাকি। চট্টগ্রাম শহরের প্রায় সমস্ত ওয়ার্ডেই এই ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষ ও তাদের পরিবারন পোষণ এই পেশার উপর নির্ভরশীল। এই সব বাহন ব্যবহার সহজ, সস্তা,পরিবেশবান্ধব এবং শহরের ছোট রাস্তায় চলতে পারে বলে স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজে এক অপরিহার্য বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সারা দেশে প্রায় ৫০ লাখ চালক পরিবারের ২.৫ কোটি মানুষ এইসব ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার ও সমজাতীয় যানবাহনের উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। এইসব যানবাহন তৈরি, মেরামত, খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মাণ, বিক্রি, চার্জিং সহ নানা ধরনের কাজে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল নগরের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে পরিবহণ না থাকায় কোটি কোটি মানুষ এইসব পরিবহণ ব্যবহার করে থাকে। এই খাত যেমন বিপুল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এইসব বাহন বিদ্যুতে চলে বলে পরিবেশ দূষণ কম করে কিন্তু বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ করা হয়। অথচ এইসব বাহনের চালকেরা বিদ্যুৎ চুরি করে না বরং বর্ধিত দামে (প্রায় ২৫ টাকা ইউনিট) বিদ্যুৎ কিনে থাকে। তাই কোটি মানুষের জীবিকা, যাতায়াত এবং দেশের অর্থনীতির বিকাশের স্বার্থে এই খাত শুরুত্বপূর্ণ।

এই সাধারণ শ্রমজীবী মানুষরা যখন রাস্তায় জীবিকার জন্য গাড়ি বের করে তখন বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় সংঘবদ্ধ চক্রের দ্বারা এই অসহায় চালকদের নির্যাতন,হয়রানি ও চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়। ফলে মেহনতি মানুষ যে ট্যাক্স দিয়ে রাষ্ট্রের জন্য ভূমিকা পালন করবে তার বদলে এই অসাধু চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়তে হয়। তাই বৈধ লাইসেন্স ও রুট পারমিট এবং এর জন্য সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তিগণ আমাদের এই আন্দোলনের যৌক্তিকতাকেই তুলে ধরে।
সরকারের কাছে এবং চট্টগ্রামের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক হিসেবে চসিক মেয়র সড়কে চাঁদাবাজি, হয়রানি, রেকারিসহ সংকট উত্তরনে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে চট্টগ্রামে এই খাতকে গতিশীল গণপরিবহনে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ শেষ হয়।