স্বল্প খরচে চবি মেডিকেলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট শুরু
তরুণ সমাজ যেন মাদকমুক্ত থাকে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে চবি মেডিকেল সেন্টারের তত্ত্ববধানে অনুষ্ঠিত ডোপ টেস্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়তে চাই। এজন্য শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হয়ে নির্ভয়ে ডোপ টেস্ট করার পরামর্শ দেন উপাচার্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের শতভাগ ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে নিজস্ব ল্যাবে চবি মেডিকেলে স্বল্প খরচে ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে।
ডোপ টেস্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডোপ টেস্ট কমিটির সমন্বয়ক চবি জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আতিয়ার রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, চবি বিভিন্ন হলের প্রভোস্টবৃন্দ, চবি ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনার পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের চীফ সেডিকেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মাননীয় উপাচার্য বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সবসময় সুস্থতা কামনা করি। তরুণ সমাজ যেন মাদকাসক্ত থেকে মুক্ত থাকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আজকের কার্যক্রমের যদি সফলতা আসে তাহলে ক্যাম্পাস, স্থানীয় গ্রামবাসী তথা পুরো দেশ এর সুফল ভোগ করবে। এজন্য তিনি হলের প্রভোস্টসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও ডোপ টেস্ট কমিটির আহ্বায়ক চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকাগুলো একটা সময় মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা বর্তমান প্রশাসন বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করতে গেলে যে ব্যয়বহুল খরচ, সেটা কমিয়ে আনার জন্য আমরা নিজস্ব ল্যাবে টেস্ট করার পরিকল্পনা করেছি। তিনি আরও বলেন, শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীসহ আমরা পর্যায়ক্রমে সবগুলোতেই হাত দেবো। তবে সর্বপ্রথম হলের শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে এসেছি।
মাননীয় উপ-উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এখানে কোনো লাভ করছে না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসোর্সগুলো ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমরা খরচ কমানোর চেষ্টা করেছি। বাকি টাকা আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা শিক্ষার্থীদের শতভাগ ডোপ টেস্টের আওতায় আনা হবে মর্মে ঘোষণা দেন। তিনি চবি সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি মিডিয়ার প্রচারের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং তাদের অব্যহত সহযোগিতা প্রত্যশা করেন।
ডোপ টেস্ট কমিটির সমন্বয়ক, চবি জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আজ আমরা চবি এ.এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করছি। আমরা এই কাজটি করছি সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, কাউকে ছোট করার উদ্দেশ্যে না। আমরা মাদক থেকে শিক্ষার্থীদের উত্তোরণের জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের টেস্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে যাতে কোনো সন্দেহ না থাকে, সেভাবেই টেস্টের মান নিশ্চিত করা হবে। আমেরিকান কিটস দিয়ে ডোপ টেস্ট করা হবে। এ সংক্রান্ত সব তথ্য সরবরাহ করা হবে। যাতে সবাই এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, চবি এ. এফ রহমান হল ১২, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর. আলাওল হল ১৫, ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর, শহিদ আব্দুর রব হল ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর, মাস্টার দা সূর্যসেন হল ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর, শাহ আমানত হল ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর, সোহরাওয়ার্দী হল ৩০, ৩১ ডিসেম্বর, ১ ও ২ জানুয়ারি শাহজালাল হল, ৩, ৪, ৫ ও ৬ জানুয়ারি, শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে।