স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, পুনর্গঠন করে দেশ গড়তে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, এখন কাজ করার পালা। দেশকে গড়তে হবে, পুনর্গঠন করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা, আশা রক্ষা করাই এখন আমাদের বড় কাজ। বিএনপির কর্মী হিসেবে আপনি মানুষের কাছ থেকে যে সম্মান পান, সেটাকে ধরে রাখতে হবে।’

‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ে বরিশাল ও রংপুর বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন তারেক রহমান। বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি ও রংপুর জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কর্মশালায় বরিশাল ও রংপুর বিভাগের বিএনপির নেতাকর্মীরা যোগ দেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন দেশের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা হবে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। কারণ, গত ২০ বছর ধরে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, তবে এবার তারা ভোট দিতে পারবে। তাই, তিনি উল্লেখ করেন যে এই নির্বাচন হবে আরও কঠিন এবং গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, “একজন রাজনৈতিক কর্মীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো জনগণের আস্থা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। যারা ১৫ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় ছিল, তারা এখন জনগণের আস্থা হারিয়ে পালিয়ে গেছে।”

এটাই বিএনপির অঙ্গীকার, দেশে সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র। গত ১৫ বছরে আওয়ামী নির্যাতনে প্রাণ হারানো নেতাকর্মীদের নামে ভাস্কর্য তৈরি করা হবে এবং শহীদ পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরও বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সকল দলের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একসাথে সরকার গঠন করলে সবার অধিকারের কথা বলা যাবে এবং গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।” তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বিএনপির প্রতি জনগণের যে আস্থা রয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং বিগত সময়ের মতো জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনো কোন্দল যেন না হয়।”

বরিশালের কর্মশালায় কথা বলছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ৩১ দফা শুধু আমাদের দলীয় দাবি নয়, এতে গণতান্ত্রিক অনেক রাজনৈতিক দলের মতামতও রয়েছে। এই ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ১৭ বছর ধরে আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি এবং জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনোভাবেই ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়।”

এদিন রংপুরের শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে শুরু হওয়া কর্মশালায় তারেক রহমান রংপুর ও বরিশালের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন। এ কর্মশালায় রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু সভাপতিত্ব করেন, এবং ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর ৩১ দফা দাবি বিস্তারিতভাবে নেতাকর্মীদের কাছে তুলে ধরেন। কর্মশালায় বিএনপির সংগীতশিল্পী বেবি নাজনীনসহ রংপুর জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির লক্ষ্য হলো দেশে সকল ধর্মের মানুষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে। তিনি বলেন, “এটাই বিএনপির অঙ্গীকার, দেশে সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র। গত ১৫ বছরে আওয়ামী নির্যাতনে প্রাণ হারানো নেতাকর্মীদের নামে ভাস্কর্য তৈরি করা হবে এবং শহীদ পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।”

তারেক রহমান আরও বলেন, আগামী দিনে গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে এক লাখ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে ৭০ হাজার নারী চিকিৎসক থাকবেন। এই নারী চিকিৎসকরা নারীদের দরজায় গিয়ে সহজেই সেবা প্রদান করবেন।

বরিশাল বিভাগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আকন কুদ্দুসুর রহমান, এবং আরও উপস্থিত ছিলেন ইসমাইল জবিউল্লাহ, অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, ড. মাহদী আমিন, মাহমুদুল হক নান্নু, মাহমুদা হাবিব, প্রফেসর মোর্শেদ হাসান খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি জনগণের আস্থা হারাতে পারে না। দলের ৩১ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে এবং জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার গঠন করতে সকল নেতাকর্মীকে একত্রিত হতে হবে।