রাজনীতি ও চাঁদাবাজি প্রসঙ্গ: জসিম উদ্দিন মনছুরি

রাজনীতি ও চাঁদাবাজি প্রসঙ্গ
রাজনীতি মানে নীতির রাজা। রাজনীতিবিদরা হবেন ন্যায় নীতিতে অবিচল। সততা,ন্যায়নিষ্টতা ,ন্যায়পরায়ণতা রাজনীতির অন্যতম প্রধান গুণ। রাজনীতিবিদরা সৎ হবে এটাই স্বাভাবিক। রাজনৈতিক দল গুলোর ইশতেহারেও বারবার উপর্যুক্ত বয়ানগুলো দেয়া হয়। যদিও এগুলো কাজীর গরু কেতাবে কলমের মত। ক্ষমতার যাওয়ার জন্য তারা জঘন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয় । ঘোষণা দেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্ররালেন্স নীতি।

স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় শ’খানিক রাজনৈতিক দলের উত্থান হলেও জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলি বরাবরই নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। নির্বাচনের আগেই সাধু গোপালের মত প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। সাদাসিধে জনগণ মধুর প্রতিশ্রুতি পেয়ে অসাধু দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে বারবার ঠকেছেন। এপর্যন্ত যারা ক্ষমতায় গেছে তারা বারবার জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন। ভঙ্গ করেছেন প্রতিশ্রুতি। জনগণকে আশাহত করেছে বারবার। সুনীতির পরিবর্তে দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সততা ন্যায়নিষ্ঠতার বালাই ছিলো না। চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব ও জোর জুলুমের শিকার হয়েছেন জনগণ প্রতিনিয়ত। যে দলই ক্ষমতায় গেছে সেই দলেই চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

একনায়কতন্ত্র, স্বজনপ্রীতি, দস্যুপনা, জনগণের কণ্ঠরোধ, দখলবাজি ও চাঁদাবাজিতে জনগণ অতিষ্ঠ। ক্ষমতাচ্যূত বিগত সরকারের চাঁদাবাজিতে জনগণ যখন দিশেহারা । রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি জনগণের অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিশ্রুতি দিয়ে বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। ফলশ্রুতিতে তারা ক্ষমতাচ্যূত হয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছে। রাজনৈতিক পালা বদলের যখন হাওয়া বইছে তখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পূর্বের ন্যায় দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ,ন্যায়-নীতি ও ভ্রষ্টতার আশ্রয় নিয়েছেন। যা জনগণকে হতাশায় নিমজ্জিত করেছে। জনগণ চায় রাজনীতি হবে সুস্থ ধারার। রাজনৈতিক দলের থাকবে না দখলদারিত্ব চাঁদাবাজি জোরজলুমের নীতি। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতাকর্মীর চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব জনসম্মুখে আসলে জনগণ বেজায় রাগে ফুসছে । ভাগ্যাহত জনগণ যখন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে তখন স্বপ্নের আড়ালে এসব অরাজকতায় জনগণ সীমাহীন অতিষ্ট।

জন্ম নিয়েছে চরম আস্থা হীনতার । জনগণের প্রত্যাশা রাজনীতি হোক সৎ মানুষের দ্বারা পরিচালিত। যাদের ন্যায় নীতি থাকবে, সততা থাকবে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হবে না। ন্যায়নীতি হবে তাদের অহংকার ও অলংকার। দমন পীড়নের রাজনীতি ধারা থেকেই জনগণ বেরিয়ে আসতে চায়। জনগণ চায় নতুনত্ব। নতুন বাংলাদেশ। যেখানে থাকবে না জোর জুলুম দখলদারিত্ব চাঁদাবাজি মারামারি ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ। এসব বিষয়ে যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে তারাই ক্ষমতার স্বপ্ন দেখতে পারেন। নতুন বাংলাদেশ গড়ার কিংবা নতুন নেতৃত্ব দেয়ার। জনগণের প্রত্যাশা অনতিবিলম্বে বন্ধ হোক দখলদারিত্ব চাঁদাবাজি ও মারামারি হত্যার মতো নিন্দনীয় কাজগুলি। এই কাজে যেই দলেই সম্পৃক্ত হোক না কেন তারা জনরোষে পরিণত হয়ে জনগণ থেকে দূরে সরে যাবে । পক্ষান্তরে যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে তারাই নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে পারবে বলে বোদ্ধাদের ধারণা।