ফের অন্তঃসত্ত্বায় চাকরিচ্যুত: ব্যবস্থা নিতে মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ

ফের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় চট্টগ্রামের এক নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে: এক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন মতে, চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে জোর করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়াও, মধ্যরাতে তার আট মাসের শিশুসহ ওই নারী শিক্ষককে কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এমন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ডলি আক্তারের।

তিনি জানান, ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর থেকে নানাভাবে হেনস্তা করা শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেন, অন্যথায় চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়।

ডলি আক্তার আরও জানান, পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর বিকেলে কর্তৃপক্ষ তাকে মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে পদত্যাগে জোর করে। তখন তাকে একটি চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেয় এবং এবং কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলে। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষ অমানবিকভাবে তাকে ওই দিনই মধ্যরাতে আট মাস বয়সি সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় রেখে আসে।

ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, অমানবিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে কমিশন।

গৃহীত সুয়োমটোর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের অভিমত, মাতৃত্বকালীন ছুটি একটি অধিকার এবং এ বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। যে ঘটনাটি ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে তা একইসঙ্গে অনৈতিক এবং অপরাধমূলক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ২৪ নভেম্বর মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন কমিশন চেয়ারম্যান।