মিয়ানমারের জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আতঙ্ক

উখিয়া প্রতিনিধি:
বার্মিজ নববর্ষকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৫ হাজার কয়েদীদের মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমার। তার মধ্যে প্রায় ৯শ’ রোহিঙ্গাও মুক্তি পেয়েছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমারের জেল থেকে মুক্তি পাওয়া এসব রোহিঙ্গারা চুরি করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দিক থেকে স্থল ও সমুদ্র সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছেন। এর মাঝেও নদী পেরিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে উখিয়ার বালুখালী -১১ নং ক্যাম্প থেকে তিনজনকে ধরে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনের বলিবাজার টাউন শীপের মো. তৈয়ব (৩০), আবদুর রশিদ (২৫) ও মো. ইদ্রিস (২৮) গত বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের নাফনদী সাঁতরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। তারা ১১ নম্বর ক্যাম্পে এসে তাদের স্বজনদের কাছে আশ্রয় নেয়। ওই ধরনের আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা রাতের অন্ধকারে চুরি করে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এ খবর প্রকাশ হলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা ও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মো. তৈয়ব ও আবদুর রশিদকে সি ব্লক থেকে উদ্ধার করে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উখিয়ার কুতুপালংয়ের প্রত্যাবাসন ট্রানজিট ক্যাম্পের অস্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেয়। অপর জন মোঃ ইদ্রিসকে শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এ- ব্লক থেকে উদ্ধার করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছেন ১১, ১২ ও ১৮ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ ও সিনিয়র সহকারী সচিব মো. রাশেদুল ইসলাম।
ক্যাম্পভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল ইউনিয়ন ৯এআরএনইউ) সহ-সভাপতি মাস্টার নুরুল আলম বলেন, ক্যাম্পগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। ইতিমধ্যে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্য পাড়ি দেয়া চার শতাধিক রোহিঙ্গা দুই মাস পর ফের বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যদিও তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
রোহিঙ্গা রিফুজি কাউন্সিলের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দিন দিন উদ্বেগ বাড়ছে। কারা কোন দিক থেকে ক্যাম্পে ঢুকছে আর বের হচ্ছে তার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এছাড়াও মিয়ানমারের জেল থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে অনুপ্রবেশ নিয়ে উৎকন্ঠা বাড়ছে বলেও তিনি জানান। এছাড়া হেলথ ও মেডিকেল সেক্টর ব্যতীত অন্য খাতের এনজিওকর্মীদের ক্যাম্পে যাতায়াত বন্ধ রাখার দাবি জানান তিনি।