সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপকূলীয় অঞ্চলের তৃণমূল পর্যায়ে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কার্যক্রম পরিদর্শন করছেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। এরই ধারাবাহিকতায় ভোলা জেলার সার্বিক নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর সুরক্ষা এবং যৌথ বাহিনীর কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ভোলা সার্কিট হাউসে নৌ কন্টিনজেন্ট, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। মতবিনিময় শেষে এক প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, আমাদের ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে এ পরিবর্তনের সুফল যাতে এ দেশের জনগণ পায়; তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভোলায় ১৫০ কিলোমিটার এলাকার জলপথ রয়েছে। এ জলপথ পাহারা দেওয়ার জন্য আগে থেকেই পুলিশ ও কোস্টগার্ড মোতায়েন ছিল। বর্তমানে নৌ বাহিনী এখানে কাজ করছে। জনগণের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। বিশেষ করে সাগর মোহনায় টহল জোরদার করা হবে। যাতে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি ও কোনো রকমের সহিংসতা না হয়। বাংলাদেশ জলসীমায় বহিরাগত কোনো জেলেরা যাতে আমাদের মৎস্য সম্পদ নিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সর্বদা নিয়োজিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেড় মাস ধরে আমাদের নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের কার্যক্রম দেখার জন্যই আজ এখানে এসেছি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষ করে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রশাসনকে আমরা সহায়তা করছি। ভোলা এরিয়ায় যে কমান্ডার আছেন, তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করবেন। এখানে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে জনগণের কিছু দাবি রয়েছে। এখানে প্রচুর গ্যাস রয়েছে, স্থানীয় এলাকাবাসী যেন এই গ্যাস পায়, সেজন্য তাদের দাবিগুলো আমি সরকারের কাছে উপস্থাপন করব।
সরকার পতনের পর ভোলার বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, ৫ আগস্টের পর এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। আমরা জানতে পেরেছি, ভোলায় ৯৭টি বৌধ আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ঢাকায় দুটিসহ মোট ৮৬টি অস্ত্র জমা পড়েছে। বাকি ১১টি লাইসেন্সের বিপরীতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র কেনা হয়নি বলে জানা গেছে। উপকূলের চরাঞ্চলে যেসব অবৈধ অস্ত্র রয়েছে, তা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে এসব অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তায় যৌথ বাহিনী কাজ করবে। এ সময় নৌবাহিনী প্রধান সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একটি জনবান্ধব ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।