মো. নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): কাপ্তাইয়ের মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের আওতাধীন মৎস্য উপকেন্দ্রে গত ৮ দিনে
মাছ আহরণ করে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩০ লাখ টাক। এসময় প্রায় ১৬৫ টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রের কেন্দ্র প্রধান মোঃ জসীম উদ্দিন জানান, দীর্ঘ ৪ মাস পর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ ও বিপনন শুরু হয়। প্রথম দিন মৎস্য আহরণ কিছুটা কম হলেও ২য় দিন থেকে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশ ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এবং ওই পরিমাণ মাছ আহরিত হয়।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের আওতাধীন কাপ্তাই উপকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ১ম দিন ১৪ মেঃ টন, ২য় দিন ২০ মেঃ টন, ৩য় দিন ২১ মেঃ টন, ৪র্থ দিন ২৩ মেঃ টন, ৫ম দিন ২২ মেঃ টন, ৬ষ্ঠ দিন ২১ মেঃ টন, ৭ম দিনে ২২ মেঃ টন, ৮ম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ২২ মেঃ টন সহ মোট ১৬৫ টন মাছ আহরিত হয়েছে। এতে করে সরকার প্রায় ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করেছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ৯ম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২০ টনের অধিক মৎস্য আহরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উপকেন্দ্র সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উপকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের মাঝে মাছ ধরার শুরু থেকেই প্রাণচাঞ্চল্য বিরাজ করছে। বর্তমানে পুরোদমে চলছে মৎস্য আহরণ কার্যক্রম। দিন যতই যাচ্ছে মৎস্য আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে হ্রদের বরাদম এলাকার মাছ আসা শুরু হলে এই উপকেন্দ্রে আহরিত মাছের পরিমাণ আরও বাড়বে।
হ্রদে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত স্থানীয় জেলে ওমর আলী, সুবল দাশ, মোঃ সানাউল্লাহ সহ কয়েকজন জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কাপ্তাই হ্রদের আইড় মাছের আহরণ ও আকার বেড়েছে। তবে বিশেষ করে কেচকি ও চাপিলা জাতীয় ছোট মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া মৎস্য আহরণ শুরুর দিকে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় মাছ ধরতে বেগ পেতে হয়েছে। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি কিছুটা কমতে থাকায় ভালই মাছ আহরণ হচ্ছে।
কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বেলাল হোসেন জানান, কাপ্তাই হ্রদের মাছের সুনাম সারাদেশে রয়েছে। তাই কাপ্তাই হ্রদের মাছ ক্রয় করতে দুর-দুরান্ত থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান ছুটে আসে। আমরা আশা করি, প্রতিবছরের মতো এবারও কাপ্তাই হ্রদের মাছ বিক্রয় করে আমরা লাভবান হবো।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়ে থাকে।