লুকিয়ে রাখা ১২ টন আদার সন্ধান

দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে পান-সুপারির গোডাউনে লুকিয়ে রাখা ১২ টন আদার সন্ধান পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৮৮ বস্তায় রাখা এসব আদা বেশি দামে বিক্রির জন্য মজুদ করা হয়।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেটে টানা কয়েক ঘণ্টার অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
অভিযানের শুরুতেই খাতুনগঞ্জের বশির মার্কেটে শাহ আমানত ট্রেডার্সে যান ভ্রাম্যমাণ আদালত। আড়তের মালিকের কাছে আদা বিক্রির কাগজ দেখতে চাইলে ওই আড়তে আদা বিক্রি হয় না বলে দাবি করেন মালিক তৈয়ব আলী।
তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পাশের শুক্কুর আলীর পান-সুপারির গোডাউনে ৮৮ বস্তায় ভরে রাখা প্রায় ১২ টন আদার সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্কুর আলী এইসব আদা শাহ আমানত ট্রেডার্সের জানালে আদার আড়তদার তৈয়ব আলীর কারসাজি ধরা পড়ে।

এ সময় শাহ আমানত ট্রেডার্সের আদা আমদানির কাগজ দেখে ভ্রাম্যমাণ আদালত জানতে পারেন মিয়ানমার থেকে কেজি প্রতি ৮৪ টাকায় কেনা এসব আদা ২৩০-২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন আড়তদার তৈয়ব আলী।

তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কেজি প্রতি ১২০ টাকায় এসব আদা পাইকারদের কাছে বিক্রির নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শাহ আমানত ট্রেডার্সের পর খাতুনগঞ্জের একতা ট্রেডার্স, শাহাদাত ট্রেডার্স এবং মাহবুব খান সাওদাগরের আড়তে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৮০-৯০ টাকায় কেজি প্রতি আদা কিনে ২৩০-২৫০ টাকায় বিক্রির প্রমাণ মেলে।
এ সময় একতা ট্রেডার্সের মালিককে ৫০ হাজার, শাহাদাত ট্রেডার্সের মালিককে ৫০ হাজার এবং মাহবুব খান সাওদাগরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামে ৩২ জন আমদানিকারক আড়তদার এবং ব্রোকারদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকায় কেনা আদা ২৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারিতে বিক্রি করছেন। যা কোনোভাবেই ১২০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না।

তিনি বলেন, সোমবারের অভিযানে যে ৪ জন আড়তদারকে জরিমানা করা হয়েছে তারা আমদানিকারক আজাদ সিন্ডিকেটের লোক বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। আজাদ সিন্ডিকেটের আমদানি লাইসেন্স বাতিল করতে ডিসি স্যারের মাধ্যমে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবো।

‘অভিযানে আমরা যেটুকু দেখেছি, বাজারে আদার কোনো সংকট নেই। আদা নানা জায়গায় মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা চলছে। আমদানিকারক, আড়তদার এবং ব্রোকাররা সিন্ডিকেট করে পেপারলেস মার্কেট তৈরির মাধ্যমে ফোনে ফোনে আদার দাম বাড়াচ্ছেন। আমরা এটা হতে দেবো না।’ যোগ করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।