আর্থিক সংকটের কারণে হাটহাজারীতে মো. রুবেল (৩২) নামের এক যুবক ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। জানা গেছে সে পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ছিলো।
রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে হাটহাজারী পৌরসভার পূর্ব দেওয়াননগরস্থ ৩নং ওয়ার্ডের আজিমপাড়া এলাকার শাব্বি বাপের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আত্নহননকারী রুবেল ওই বাড়ির মো. শফিকুল ইসলাম প্রকাশ শফি ভান্ডারীর পুত্র।
এ সময় নিহতের ভাই আক্ষেপ করে বলেন, আমার ভাইকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামানোর পরও নড়াচড়া করছিলো, কিন্তু বাস স্টেশন এলাকার যানজটের কবলে পড়ে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া সম্ভব না হওয়ায় বাঁচাতে পারলাম না।
প্রতিবেশী রিয়াদ গণমাধ্যমকে জানান, নিহত রুবেলের ফাহিয়া (১১) ও জান্নাতুল মাওয়া (৮) নামে দুই মেয়ে এবং মাহির নামের ছয় বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান আছে।
নিহতের ভাই কুতুবউদ্দিন দুপুরের দিকে গণমাধ্যমকে জানান, তখন আমি ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ হৈচৈ শুনে ঘুম ভাঙে আমার। রুবেল তার চালিত সিএনজিটি গ্যারেজে কাজ করতে দিয়েছিলো। তাই প্রায় ১৫ হাজার টাকা যোগাড় করতে হচ্ছিল।
আজকে গ্যারেজ থেকে গাড়িটি আনার কথা ছিলো। ১২ হাজার টাকা ধার দেনা করে জোগাড় করা সম্ভব হলেও বাকী তিন হাজার টাকার আমার বাবার কাছে চাই সে। কিন্তু মা অসুস্থ, তিনিও নগরীর একটি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কয়েকদিন পূর্বে এমআরআই করিয়ে বাড়িতে এনেছিলাম। আজ পুনরায় রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাবার কথা থাকলেও পরে তারিখ পরিবর্তন হয়।
এই অবস্থায় বাবা এবং আমাদের হাতেও তেমন টাকা ছিলোনা। তাই তাকে টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। হয়তো অভিমান করেই আত্নহত্যা করতে সকালের দিকে সে ঘরের তীরের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে পড়ে।
পরে তার স্ত্রী ঘরে ঢুকে তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখে চিৎকার করলে আশপাশের সবাই দৌঁড়ে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক রণি দেব জানান, হাসপাতালে আনার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়েছিলো।
জানতে চাইলে হাটহাজারী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার বিভাস কুমার সাহা বেলা আড়াইটার দিকে আত্নহত্যার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে জানান, পরিবারের কোনো অবিযোগ না থাকলে লাল বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে।