মধ্যরাত থেকে শুরু কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা, জেলেদের মনে উৎসবের আমেজ

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু,কাপ্তাই (রাঙামাটি): দীর্ঘ চার মাস ৭দিন পর আজ শনিবার মধ্যরাত (১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা) থেকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎতম কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হবে। এতে মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী ও জড়িত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। এরআগে মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য গত ২৫ এপ্রিল-২০২৪ তারিখ থেকে কাপ্তাই হ্রদে তিন মাসের জন্য মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। কিন্তু হ্রদে পানি স্বল্পতার কারণে দুই দফায় নিষেধাজ্ঞার সময় বর্ধিত হয় আরও এক মাস সাতদিন। অবশেষে পহেলা সেপ্টেম্বর শনিবার মধ্যরাত থেকে হ্রদে মাছ শিকার শুরু হচ্ছে।

এদিকে, মাছ ধরা শুরু হওয়ার সংবাদে জেলেদের পাশাপাশি রাঙামাটির মাছের প্রধান বিপনন কেন্দ্র গুলোতেও চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। মধ্যরাতে মাছ আহরণ শেষে রোববার(১ সেপ্টেম্বর) ভোরে জেলার কাপ্তাই, মারিশ্যা,উপকেন্দ্র গুলো সহ রাঙামাটির প্রধান বিপণন কেন্দ্রে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে কাপ্তাই হ্রদ হতে আহরিত মাছ নিয়ে আসবে জেলেরা। এরপর পল্টুনে আসা এসব মাছের শুল্কহার আদায় শেষে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্নস্থানে বাজারজাত করা হবে। দীর্ঘ চার মাসের অধিক সময় বিরতির পর কাজে ফিরেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবিষয়ে কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নবী হোসেন জানান, শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরু হতে যাচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় পর কাজে ফিরেছে আমাদের জেলে ও ব্যবসায়ীরা। সবার মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, এবছর কাপ্তাই হ্রদের মাছের গুনগত মান ভাল হবে। কাপ্তাই হ্রদের স্থানীয় জেলে সুবল দাশ, রওশন মিয়া, ওমর আলী সহ একাধিক জেলে জানান, আমরা আমাদের বোট, জাল সব রেডি করে রেখেছি। রাতেই আমরা মাছ আহরণে কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলবো। অনেকদিন পর মাছ ধরা শুরু হওয়ায় আমাদের মাঝে সস্তি ফিরে এসেছে।

এদিকে, কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ইতোমধ্যে বিএফডিসির পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রাঙামাটি শহরের প্রধান বিপণন কেন্দ্রসহ অন্যান্য বিপণন কেন্দ্রের পল্টুনগুলো আগেই প্রস্তুত করা হয়েছে। রোববার ভোর থেকে পল্টুনে মাছ নিয়ে আসবে জেলেরা। এরপর এই মাছের শুল্কহার আদায় শেষে বাজারজাত করবেন ব্যবসায়ীরা। প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের পহেলা মে’ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকে।