বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের ওপর যুগ যুগ ধরে চলা জুলুম-নির্যাতনের অবসান ও সমাজ-রাষ্ট্রে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠাই এই সংগঠনের একমাত্র উদ্দেশ্য। আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যপানে ছুটতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো: তসলিম, কবির আহমাদ, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শ্রমিক। এসব শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের বদৌলতে রাষ্ট্র-সমাজ সচল থাকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেললেও তাদের জীবনে সুখের দেখা পায় না। রাষ্ট্রযন্ত্র-অসাধু মালিকরা শ্রমিকদের জীবন থেকে সুখের বাতি কেড়ে নিচ্ছে। আমরা যদি শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্টের অবসান করতে চাই তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের আদর্শের ব্যাপক বিস্তার ঘটাতে হবে। শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির সুফল তুলে ধরে তাদেরকে সংগঠনের ছায়াতলে নিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। শ্রমিকরা যদি একতাবদ্ধ হয় তাহলে এদেশ থেকে সকল প্রকার দুঃশাসন, অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটবে। শ্রমিকদের নেতৃত্বে গঠিত হবে আগামীর বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, শ্রমিক সংগঠন প্রাণ হচ্ছে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন। বিগত সময়ে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার অনেকটাই কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আজকে দুঃসময়ের অবসান ঘটেছে। আমাদেরকে এখন প্রতিটি পেশার শ্রমিকদের সংগঠিত করতে হবে। শ্রম আইনের আলোকে তাদেরকে নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গঠন করতে হবে। একই সাথে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের নেতৃত্ব তুলে দিতে হবে শ্রমিক দরদি ও সৎ, যোগ্যদের হাতে। অসৎ নেতৃত্ব কখনো শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ করে না। তারা নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য অপেক্ষায় থাকে। শ্রমিকদের সমস্যাকে কাজে লাগিয়ে মালিকদের থেকে উপঢৌকন গ্রহণ করে। আমাদেরকে এসব নেতৃত্ব পরিহার করতে হবে।
এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে কেন্দ্র থেকে ইউনিট পর্যন্ত সাংগঠনিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা। দুর্বলতাকে দূর করার জন্য সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মাঠে ময়দানে বাস্তবায়ন করতে হবে। একটি গতিশীল সংগঠন এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ, রিপোর্টিং ও পর্যালোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এসব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে হবে। আমরা এসব কাজ যত সুষ্ঠুভাবে করতে পারব সংগঠন ততই মজবুত হবে।