কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই উপরিস্থিতে দেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছে ‘ন্যাশনাল কিন্ডারগাটেন ফোরাম বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ।
২৬ এপ্রিল ‘কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে বাঁচান’ শিরোনামে দেয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান এই স্কুল সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো অধিকাংশ ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত। মাসিক সম্পূর্ণ আয়ের অর্ধেক ঘর ভাড়া, ৪০ শতাংশ সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের বেতন ভাতা, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়। অধিকাংশ স্কুলসমূহ ভর্তুকি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কিন্ডারগার্টেনগুলোর কঠিন সংকটের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে রমজান ও ঈদুল ফিতর পর্যন্ত স্কুলসমূহ যদি বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে বিপদে পড়তে হবে কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহের মালিকদের। এতে এপ্রিল মাসের ঘর ভাড়া, সাথে শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দের ৩ মাসের বেতন ভাতা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করা কঠিন হয়ে পড়বে।
‘দেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহ সরকার বা কোন সংস্থার সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া সম্পূর্ণ পরিচালিত হয়ে থাকে। দেশে প্রায়ই ১ লাখ ৭ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এই ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সকল শ্রেণীর ১ থেকে দেড় কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। সেই সাথে দেশের প্রায় 15 লাখ শিক্ষিত বেকার যুবক, যুবতির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। লেখা পড়ার মানকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে এসব কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি স্কুলসমূহ।’
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা কামনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণে কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহে প্রতিবছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা অধিদপ্তরের মাধ্যমে যেভাবে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয় তেমনিভাবে যে কোন মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আনুমানিক ব্যয় অনুপাতে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
আর কতদিন বন্ধ থাকবে সেটাও সবার অজানা। দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে মানুষ বানানোর গুরু দায়িত্ব পালন করা স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ দুর্দশাগ্রস্ত। আশঙ্কা করছি যতই দিন যাবে ততই দেশে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকতর সংকটে নিপতিত হবে। এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে এখনই বেসরকারি স্কুলগুলোর জন্যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা প্রয়োজন।
আশা করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবজাতির মৌলিক চাহিদার অন্যতম এই শিক্ষাখাতের বর্তমান আর্থিক সংকট ও ভবিষ্যতের ঘনায়মান আর্থিক দুরবস্থা বিবেচনা করে অতি দ্রুত কোনো না কোনো ধরনের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করবেন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের এই ক্রান্তিকালে সহযোগিতা কামনা করে ন্যাশনাল কিন্ডারগাটেন ফোরাম বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান হাসান মুকুল, মহাসচিব কাজী সরোয়ার খান মনজু, সিনিয়র সহ-সভাপতি রিয়াজ মোহাম্মদ, সহ-সভাপতি হাবিব রেজা এ বিবৃতি দেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান বিশ্ব এবং দেশে করোনা মহামারি চলছে। এই মহামারি থেকে ছেলে-মেয়েদের সুরক্ষার স্বার্থে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।