মির্জা ইমতিয়াজ শাওন ও নজরুল ইসলাম লাভলু:: বিপদ সীমায় কাপ্তাই লেকের পানি, পানি না ছাড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে কর্তৃপক্ষ দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রামের সাথে আলাপকালে এমনটিই জানিয়েছেন জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক।
এবিষয়ে শনিবার(২৪ আগষ্ট) দুপুর ২টা ৭মিনিটে যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাই বাঁধ ও পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রামকে জানান, শনিবার(২৪ আগষ্ট) দুপুর ২টা ৫মিনিট পর্যন্ত লেকে পানি আছে ১০৭.৫৩ ফুট এমএসএল। তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। বর্তমানে চট্টগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে আমরা সিধান্ত নিয়েছি কাপ্তাই লেকের পানি না ছাড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে কর্তৃপক্ষ। টানা ভারি বৃষ্টিপাত না হলে অবস্থা আশা করি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে ইনশাআল্লাহ। নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলেই কেবল মাত্র পানি ছাড়া হবে এবং সেটা যতদূর সম্ভব জনসাধারণের ক্ষয় ক্ষতি যাতে কম রাখা যায় সে বিষয়টি প্রধান্য দিয়ে।
তিনি জানান, সাধারণত এ সময়ে হ্রদে ৯৭ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল) পানি থাকে বর্তমানে এটা অনেক বেশি রয়েছে। এর ফলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (কপাবিকে) ৫ টি ইউনিট হতে সর্বমোট ২ শত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (কপাবিকে) ৫ টি ইউনিট মিলে সর্বমোট ২ শত ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে।
কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর ফলে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ে যদি কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার ব্যবস্থা করা না হয়, তবে কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন বহু ঘরবাড়ি ক্ষতির সম্মূখীন হওয়ার আশংকা করছেন হ্রদ সংলগ্ন মানুষ। কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন নিম্মাঞ্চল এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তাদের অনেকের ঘরবাড়িতে পানি চলে এসেছে। ঘরে পানি ডুকছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সকলের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
এদিকে, এখনই কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়া হচ্ছে না। এমনটা নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ও কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন। তিনি কাপ্তাই লেকের পানির বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়া হবে এমন একটি গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়ানোর পর ভাইরাল হয়ে যায়। এতে নিম্নাঞ্চলের মানুষের আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব বলে জানিয়েছে কাপ্তাই বাঁধ কর্তৃপক্ষ।
বাঁধ কর্তৃপক্ষ সবাইকে সচেতন থাকা ও সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার বিষয়ে জনসাধারনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদের গেইট গুলো খুলে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে সব সময় সিন্ধান্ত নেওয়া হয় এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। এছাড়া সবসময়ই কাপ্তাই ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়। এরপর তারাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেন। এবারও গেইট খোলার অবস্থা তৈরি হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।