শুরু হলো সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান

শাওন ইমতিয়াজ :: সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য রহমত, বরকত আর নাজাতের বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে আবার এলো পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এর আগে শুক্রবার রাতে তারাবির নামাজ পড়া এবং শেষ রাতে সেহ্রি খাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাহে রমজানের আনুষ্ঠানিকতা।

ঘরবন্দি মানুষের অসহায়ত্বের সময়ে ভিন্ন এক মহিমায় আমাদের দেশেও হাজির হলো সংযমের মাস পবিত্র রমজান। উৎসববিহীন এক ব্যতিক্রমী রমজানের মুখোমুখি হলো দেশের রোজাদাররা। নজিরবিহীন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি বিশ্ব। সারা পৃথিবীতে দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে করোনা। এটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এমন পরিস্থিতি কারও কল্পনাতেও ছিল না। কর্মহীন হয়ে পড়ছে অসংখ্য মানুষ। তিনবেলা খাবার জোটানোই যেন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও।নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী আমরা অসহায় মানুষ পাশে দাঁড়াই। আর আত্মসমর্পণ করি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে। রমজান অনেক মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ মাস। এ মাসে মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি অবিরত রহমত বরকত নাজিল করেন। আর বান্দাকে মাগফেরাত ও নাজাত দান করেন।

বাংলাদেশের আকাশে গতকাল সন্ধ্যায় পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ থেকে মাসব্যাপী রোজা শুরু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় রমজান শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। আগামী ২৬ রমজান (২০ মে বুধবার রাতে) সারাদেশে পবিত্র লাইলাতুল কদর উদযাপিত হবে।

শেষ রাতে সেহারী খাওয়ার মাধ্যমে সিয়াম সাধনাও শুরু করেন। এই সিয়াম সাধনা চলবে মাসব্যাপী। তবে এবার করোনার কারণে মুসল্লিদের তারাবির নামাজ ঘরেই আদায় করতে হচ্ছে। আগেই মসজিদে তারাবির নামাজ আদায়ের ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে ১২ জনের বেশি কাউকে নামাজে শরিক হতে নিষেধ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, মাহে রমজানে এশার জামাতে ইমাম, মোয়াজ্জিন, খতিব, খাদিম এবং দুইজন হাফেজসহ সর্বোচ্চ ১২ জন অংশ নিতে পারবেন। তারাই মসজিদে তারাবির নামাজে অংশ নেবেন। শুক্রবার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, অন্য মুসল্লিরা নিজ নিজ ঘরে এশা ও তারাবির নামাজ আদায় করবেন। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ্র রহমত কামনা ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করার স্বার্থে রমজান উপলক্ষে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইফতার মাহফিলের আয়োজন বা যোগদান করতে পারবেন না।

এদিকে রমজানে কোনভাবেই যেন ফুটপাথে ইফতার তৈরি ও বিক্রি না হয় সে বিষয়ে তৎপর থাকতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে নির্দেশনাসহ কোন ব্যক্তি বা সংগঠন অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অথবা ইফতার বিতরণের নামে জনসমাগম যাতে না করে ফেলে সেনিশ্চত করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ কারণে এবার ফুটপাথেও থাকছে না কোন ইফতার সামগ্রীর পসরা। উৎসববিহীন এক ব্যতিক্রমী রমজানের মুখোমুখি হলো দেশের রোজাদাররা।