মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সাবেক সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের সাজার রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের করা আপিল মঞ্জুর করে বিচারপতি আবদুর রবের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
রায়ের পর আইনজীবী রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, “হাইকোর্ট আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের আপিল মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করেছেন। তাই তারা মিথ্যা মামলার দায় থেকে খালাস পেলেন।”
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলায় গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিন।
গত বছরের ১০ অক্টোবর হাইকোর্ট তাদের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণের পর জরিমানা স্থগিত করে তাদের জামিন মঞ্জুর করে। গত বছরের ১৫ অক্টোবর তারা জামিনে কারামুক্তি পান।
এই মামলায় আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করে। আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে তা মঞ্জুর করে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল আমিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের বিষয়ে আইনজীবী রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, “সাজা বৃদ্ধি চেয়ে করা আপিলের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি হয়নি। বুধবার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলটি না চালানোর কথা জানিয়ে তা তুলে নেয়।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল।
এ মামলায় আদিলুর রহমানকে ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সে সময়ে তিনি ৬১ দিন কারাভোগ করেন।
২০১৩ সালের ১১ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে অধিকারের কার্যালয় তল্লাশির পরে দুটি কম্পিউটার ও দুটি ল্যাপটপ জব্দ করে ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিন ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করেন।