টানা বর্ষণে ফের খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
পানিবন্দি বহু পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন। গত দুই মাসে তৃতীয়বারের মতো খাগড়াছড়ি প্লাবিত হলো। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড় ধস। জেলা শহরের শালবন ও কুমিল্লা টিলা এলাকায় বসতঘরের পাশে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বন্যাকবলিত ও পাহাড়ের পাদদেশে থাকা পরিবারগুলোর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা ও পানছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার(১৯/০৮/২০২৪) দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, চেঙ্গী নদী, খাগড়াছড়ি ছড়া ও মধুপুর ছড়ার পানি বেড়ে মুসলিমপাড়া, কালাডেবা, বটতলী, গঞ্জপাড়া, শান্তি নগর, শব্দমিয়াপাড়া, ফুটবিল, এপিবিএন, মিলনপুর, খবংপুড়িয়াসহ কয়েকটি এলাকার বাড়িঘর ডুবে গেছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আরা সুলতানা বলেন, পানিবন্দি মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত পরিবারের জন্য বর্তমানে ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হবে।
দীঘিনালায় মাইনী নদীর পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেডকোয়ার্টার, জোড়াব্রিজসহ চারটি এলাকায় রাস্তা ডুবে যাওয়ায় রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ির সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ডুবে গেছে মেরুং বাজারও। টানা বর্ষণে দীঘিনালার মেরুং, বাবুছড়া ও কবাখালী ইউনিয়নের প্রায় ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনর রশিদ বলেন, ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের জন্য প্রাথমিকভাবে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়েছে। পরে রান্না করা খাবার দেওয়া হবে।
এছাড়া পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী নদী, পুজগাং ও লোগাং ছড়ার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চেঙ্গী ইউনিয়ন, সদর ও লতিবান ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে।
পানছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা মৌমিতা দাশ বলেন, উপজেলায় ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে কর্মকর্তাকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যাতে আমরা বার বার অনুরোধ করেছি। তাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত লোকজনের জন্য জেলায় ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাদের বিশুদ্ধ পানি এবং খাবারের জন্য প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা বন্যা কবলিত লোকজনের জন্য ৪০০ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
সবশেষ গত ২ আগস্ট খাগড়াছড়ি বন্যা কবলিত হয়। এর আগে ২ জুলাই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল।