হালদায় ৪ দিনে চারটি মা মাছ ও একটি ডলফিনের মৃত্যু

শফিউল আলম,রাউজানঃ

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষিত দেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে আবারও দুটি মৃত কাতলা মা মাছ ভেসে ওঠে।শুক্রবার (২৮জুন) দুপুরে পৃথক দুটি স্থান থেকে এ মা মাছ গুলো উদ্ধার করে। হাটহাজারীর ১০ নং উত্তর মাদার্শার কুমারখালি ঘাট ও কুমারখালী ঘাটের সামনে সুলতানা বাপের ঘাট এলাকায় ভেসে ওঠে মৃত কাতলা মা মাছ দুটি। এই মাছ দুটির দৈর্ঘ্য-৯৮ সে.মি. ও ওজন-প্রায় ১৬ কেজি, দৈর্ঘ্য -৮৫ সে.মি. ও ওজন প্রায়-১০ কেজি।প্রথম মাছটির কানকোর নিয়ে বড়শির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্বিতীয় মাছটি পচে গলে যাওয়ায় কোনো আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়নি।কিছু অসাধু মাছ শিকারি এবং নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারণেই এ মৃত্যু বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এভাবে হালদায় মা মাছ ও ডলফিন মারা গেলে জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়বে।এ অবস্থায় হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হালদার পাড়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাউজান উরকিরচর বাকর আলী চৌধুরী ঘাট এলাকার নদী থেকে মৃত মা রুই মাছ ভেসে ওঠে। এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেল ৪টায় নদীর হাটহাজারী অংশে একটি বড় ডলফিন মরে ভেসে উঠে। এছাড়া এক সপ্তাহ আগে ১২ কেজি ওজনের মৃত কাতলা মাছ নদীতে ভেসে উঠেছিল। গত চারদিনে হালদায় ডলফিনসহ মা মাছ মরছে চারটি। তবে হালদার কান্না শুনার কেউ নেই। এভাবে মা মাছ ডলফিন মরলে অস্তিত্ব হারাবে হালদা। হালদাকে বাঁচতে নদীর দু”পাড়ের বাসিন্দাদের নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন। এই বিষয়ে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে ও শাখাখালে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের জাল, বঁড়শি ও রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত মাছ ধরা হচ্ছে যা হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রের জন্য হুমকি। হালদায় চারদিনে ডলফিনসহ চারটি মা মাছের মৃত্যু হালদা বাস্তুতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।এছাড়াও কলকারখানা, পোলট্রি ও ডেইরি ফার্মের বিষাক্ত বর্জ্য হালদা নদী ও নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল হয়ে প্রতিনিয়ত পানিতে পড়ছে যা হালদার জলজ পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। হালদা বাস্তুতন্ত্রকে মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল করতে দূষণসহ বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তাহলে হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি।