বিকল্প রুটে সেন্টমার্টিনে যাত্রীরা, ঝটিকা সফরে বিজিবি মহাপরিচালক

শামসুউদ্দীন, টেকনাফ (কক্সবাজার) :
ঝটিকা সফরে সেন্টমাটির্নে বিজিবি মহাপরিচালক। বুধবার (১২ জুন) বিকাল ৬ টার সময় সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী,(ওএসপি,বিএসপি,এসইউপি,এনডিসি,পিএসপি,এমফিল) বিজিবি” নিজস্ব হেলিকপ্টার যোগে সেন্টমার্টিন পরিদর্শন করেন বিজিবি মহা পরিচালক। এসময় তিনি সেন্টমার্টিন বিজিবির লাইট হাউস ক্যাম্পের নির্মানাধীন বিল্ডিং ও দ্বীপের বিওপি পোস্ট গুলো পরিদর্শন করেন। এ ছাড়াও বিজিবি সকল সৈনিকদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন।
পরে তিনি কক্সবাজারের উদ্দেশ্য দ্বীপ ত্যাগ করেন। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক এর সফর সঙ্গী ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, এডিজি (জিএস বিআর), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এডিজি (এইচকিউ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহাদাত শিকদার, এডিজি (বিএসবি)
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আনোয়ার হোসাইন, টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, পিএস টু ডিজি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, এপিএস টু ডিজি মেজর ইউসুফ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও এডিসি ক্যাপ্টেন মাজেদুল আলম প্রিতু প্রমুখ।
এদিকে প্রায় সাপ্তাহখানিক পর সেন্টমার্টিনে বিকল্প রুটে নৌ চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার (১২ জুন) সন্ধায় জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া পর উক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কক্সবাজার টেকনাফের নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্ট থেকে গুলিবর্ষণের গত ৭ দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌ যান চালাচল বন্ধ রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন খাদ্যপন্য সংকট দেখা দেয় । ফলে বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে পন্য নিয়ে যাওয়া এবং সীমিত আকার যাত্রী আসা যাওয়া শুরু করেছে বৃহস্পতিবার থেকে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, গুলি বর্ষণের ঘটনায় টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌ যান চালাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপে খাদ্যপণ্য সংকট তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে যাত্রী আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে বিকল্প পথে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়ার জেটি ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পন্যবাহী ট্রলার যাবে সেন্টমার্টিনে। একই সঙ্গে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হয়ে নতুন চ্যানেলে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সীমিত আকারে যাত্রী আসা যাওয়া শুরু হবে।
দ্বীপের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে মিয়ানমারের অজ্ঞাত একটি অস্ত্রধারি গোষ্ঠি। যে গোষ্ঠিটি কোনভাবেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে ট্রলার বা স্পীড বোট চলাচল করতে দিচ্ছে না। ওই রুটে ট্রলার বা বোট দেখার সাথে সাথেই গুলি বর্ষণ করছে। গত মঙ্গলবার গুলিবর্ষণ করা হয় ৫ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফ থেকে যাওয়া একটি স্পীড বোটকে লক্ষ্য করে। এ অবস্থায় বিকল্প রুটে চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় দ্বীপ বাসীর উৎকন্ঠা কমবে। তিনি বিকল্প রুট চলাচলের জন্য একটি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতাও কামনা করেন।
এর আগে ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমার থেকে। ৮ জুনও পণ্যবাহী একটি ট্রলারে আবারও গুলি করে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে গুলি লাগে।
একের পর এক মিয়ানমারের গুলিবর্ষণ ঘটনায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে বন্ধ রয়েছে সার্ভিস ট্রলারসহ নৌযান চলাচল। যার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও অসুস্থ অনেক রোগীকে সেন্টমার্টিন থেকে আসা যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী জানান, তিনটি ট্রলারে করে সেখানে ঈদের ছুটি বা বিভিন্ন কাজে গিয়ে আটকে পড়া দুই শতাধিক মানুষকে নিয়ে রওনা হয়েছে। ট্রলারগুলো মূলত বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফে পৌঁছাবে।
তিনি আরও জানান, খাদ্যসামগ্রী নিয়ে টেকনাফ থেকে নৌযান সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা ছিল সেটি যেতে পারেনি। কারণ গতকাল থেকে নাফ নদের একটি এলাকায় ব্যাপক গোলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিকল্প পথে হয়তো আগামীকাল কক্সবাজার থেকে এই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে পারে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাািটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।