কি আছে আমাদের কপালে ?

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী::

কি আছে আমাদের কপালে? কারোনা বিদ্ধ এই সময়ে এমন প্রশ্নটি আতঙ্ক কিংবা ভীতি ছড়ানোর জন্য নয় । সাবধানতার। সতর্কতার।
একদিকে ঘরে থাকার জন্য সরকারের আহ্বান, অনুরোধ এবং ক্ষেত্রবিশেষে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশও। আর অন্যদিকে কিছু গার্মেন্টস সহ কোন কোন শিল্প গ্রুপের প্রতিষ্ঠান খোলা। ‌ হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী গমনাগমন করছেন। সেসব প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কোনো বিতর্কে যেতেও চাইনা। কিন্তু নাগরিক হিসেবে বহিরাঙ্গনের নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এই
এই প্রশ্নও তো আসে, তবে কি তারা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলেন ?
নাকি এই দুর্যোগ সময়েও সরকারের আহ্বান কিংবা ডাক তাদের কানে ঢুকছে?
নাকী বিষয়টি অন্যকোথাও, অন্য কোনোখানে?
অন্য কোন শক্তি এ নিয়ে খেলছে না তো? আমাদের জননিরাপত্তা, সামাজিক শৃঙ্খলা, এসব নিয়ে অন্য কোন রাষ্ট্র বা তাদের প্রতিনিধিরা কি তৎপর ? নাকি বিষয়টি শুধুই আমাদের লোলুপ ব্যবসায়ীক ধনিক-বণিক শ্রেণীর অপরিণামদর্শিতা? এমন লক্ষণ আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতারই প্রকাশ?!
এবার এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথা বলা যাক। তাঁর ভাষ্য: ‘ আজ রবিবার (১৯/০৪/২০২০) বিকেল পাঁচটার দিকে বায়জিদের Textile এলাকায় দেখা গেল অনেক পথচারি অপেক্ষমান। তাদের সিংহ ভাগই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মহিলা শ্রমিক।‌ চিকিৎসক বহনকারী একটি Ambulance-কেও বার বার পথিমধ্যে থামাতে হল তাদের আধিক্যে। ঘন ঘন হর্ন দিয়ে সামনে এগুতে এগুতে হচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্সটিকে। আগের দিনেও একই দৃশ্য চোখে পড়ে । ‘
প্রত্যক্ষ দর্শী জানান,
পিপিই তৈরিসহ নানা অজুহাতে শহরে অনেক কারখানাই খোলা আছে। নিয়মিত হাজার হাজার শ্রমিক এখনো গমনাগমন করছেন এসব কারখানায় !
প্রসঙ্গক্রমে সিনিয়র চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমানের একটি বক্তব্য ও তথ্যচিত্র দিয়েই এই লেখাটি শেষ করতে চাই।
আমাদের সামগ্রিক অসচেতনতা, ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের হার ও মৃত্যমিছিলের দিকে যাত্রা , অন্যদিকে আমাদের যা স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা: সব মিলিয়ে কি আছে আমাদের কপালে ?- এমন প্রশ্নে এই চিকিৎসক জানালেন, ‘ কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ’ই জানেন ।’
স্মর্তব্য যে, করোনায় প্রথম সংক্রমণ চিহ্নিত হওয়ার ৪০ দিন পর USA-তে কর্ণ রোগের সংক্রমণ চিহ্নিত হয় মাত্র ১০০ এর মতো। মারা গিয়েছিলেন মাত্র ৪-৫ জন। মার্কিনীরা ওই সময়ের মধ্যে করোনা আছে কিনা তার লক্ষাধিক টেস্ট সম্পন্ন করেছিলেন।
আর আমাদের প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ৪১ দিনের মাথায় এখন সংক্রমণ চিহ্নিত হল দুহাজারের বেশি। মৃত্যু ১০০ এর কাছাকাছি! সনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে ২৫০০০ এর কম।
কী যে হবে আমাদের অনিশ্চিত গন্তব্যে !
( লেখক : সহ-সভাপতি, বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও আহ্বায়ক, চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগ)