রোহিঙ্গা বোঝাই আরও দু’ট্রলার ঠেলে দিচ্ছে মিয়ানমার

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে ১৪ দিনের সংঘ নিরোধে পাঠানো হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা উদ্ধারের ক’দিন যেতে না যেতেই আরও কয়েক শ রোহিঙ্গা বোঝাই দুটো ট্রলার বাংলাদেশ অভিমুখে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড এ দুটো ট্রলার করোনা মহামারীর কারণে তাদের সীমানায় ঢুকতে দেয়নি। মিয়ানমার নৌবাহিনী রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার দুটো বাংলাদেশ জলসীমার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে জানা যায়।

মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস শুক্রবার বলেছে, সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গা বহনকারী বোটগুলো অনুসন্ধান ও উদ্ধারের জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলোর সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহবান জানান।

প্রসঙ্গত গত ১৬ এপ্রিল ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা।প্রায় দুই মাস আগে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়ে করোনা মহামারীতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও বোটটি মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে ডুকতে পারেনি। মালয়েশিয়া বোটটিতে রসদপাতি দিয়ে গভীর সমুদ্রে ঠেলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে বোটটিকে মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের সমুদ্রসীমা থেকে স্কট করে বাংলাদেশ সমুদ্রসীমায় ঠেলে দেয়।

রোহিঙ্গারা ফরটিফাই রাইটসকে বলেছে, কমপক্ষে আরও দুটি নৌকা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্রে ভেসে রয়েছে।ফরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথু স্মিথ বলেন, ‘শরণার্থীদের স্বল্প রসদপাতি দিয়ে নৌযানকে অনিশ্চিত সমুদ্র যাত্রায় ঠেলে দেয়া বেআইনি এবং মৃত্যুদণ্ডের মতো।’

মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ ১৬ এপ্রিল দুই শতাধিক রোহিঙ্গা থাকা আরেকটি নৌকা শনাক্ত করে এবং সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সমুদ্রের দিকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় বলে সংগঠনটির দাবী।
রয়্যাল মালয়েশিয়ান এয়ার ফোর্স (আরএমএএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এবং রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনী নৌকাটিকে দেশের জলসীমায় প্রবেশে বাধা দিয়েছে এবং সমুদ্রে এ জাতীয় নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করবে।

উখিয়ার ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমুদ্র উপকূল থেকে ৪/৫ বড় ফিশিং ও কার্গো ট্রলার ছেড়ে যায়।এতে হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা রওয়ানা দেয় মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্য। তন্মধ্যে দুটো ট্রলার গত ২৭ মার্চ থাইল্যান্ডের মেরিনার্স বর্ডারে ঢুকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরদিন জাহাজ দুটো মালয়েশিয়া উপকূলে ভিড়তে চেষ্টা করে।

কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সেখানে কঠোরতা থাকায় কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী রোহিঙ্গা বোঝাই জাহাজ দুটো মালয়েশিয়া উপকূল ভিড়তে দেয়নি। অবশেষে দালালরা রহস্যজনক উপায়ে ২০২ জনের রোহিঙ্গা বহনকারী একটি বোটকে গত ৪ এপ্রিল মালয়েশিয়ার লঙ্কাউই দ্বীপ উপকূলে ভিড়াতে সক্ষম হয়েছে। অন্যটি গত বুধবার রাতে ৩৯৬ জন রোহিঙ্গা নিয়ে টেকনাফের শামলাপুর উপকূলে ভিড়ে।