বাঙালীর গর্ব বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম

চট্টগ্রাম সাহিত্য পাঠচক্রের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভৌত বিজ্ঞানী প্রফেসর ইমেরিটাস ড. জামাল নজরুল ইসলাম এর ৮৫ তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে ড. জামাল নজরুল ইসলাম ও স্বদেশপ্রেমের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা ও কবিতা পাঠ গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি বাবুল কান্তি দাশের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, চবির পালি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু। মুখ্য আলোচক ছিলেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডাঃ প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবালের পরিচালনায় এতে আলোচনা, কবিতা পাঠ সঙ্গীতে অংশনেন উত্তরজেলা জাসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ভানুরঞ্জণ চক্রবর্তী, কবি আশীষ সেন, ডাঃ মেহ- ই – জাবীন তুলি, প্রধান শিক্ষক বিজয় শংকর চৌধুরী, ইয়ুথ কয়ারের সংগঠক সুজিত দাশ অপু, সুজিত চৌধুরী মিন্টু, আবৃত্তিশিল্পী শবনম ফেরদৌসী, শাহীন ফেরদৌসী, সাংবাদিক স.ম. জিয়াউর রহমান, সংগীত শিল্পী অচিন্ত কুমার দাশ, সঙ্গীতা চৌধুরী, নিহার ভট্টাচার্য্য, কবি সজল দাশ, তবলা শিক্ষক কানুরাম দে, শিমুল দত্ত, রফিক, বাঙালীনিলয় দে প্রমুখ। বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম। বিশ্ব বরেণ্য মণীষী, ক্ষণজন্মা পদার্থ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন পৃথিবী বিখ্যাত পদার্থবিদ এবং কসমোলজিস্ট। ১৯৬৮ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ হতে ফলিত গণিত এবং তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় ডঃ জামাল ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর ১৯৮২ সালে লাভ করেন ডক্টর অফ সায়েন্স (উঝপ) ডিগ্রী। একে বলা হয় “হায়ার ডক্টরেট” ডিগ্রী। বিজ্ঞানের জগতে ডঃ জামালের অবদান কতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালামের কথায়ই বোঝা যায়। তিনি বলেছিলেন, “এশিয়ার মধ্যে আমার পরে যদি দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি নোবেল পুরস্কার পায়, তবে সে হবে প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম।” এই মানুষটাই সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর আক্রমণ বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন। প্রফেসর জামালের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন দেখলে চমকে যেতে হয়। তিনি ১৯৬৭-১৯৭১ পর্যন্ত ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি, ক্যাম্ব্রিজে কাজ করেন। এরপর ক্যালটেক এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে; ১৯৭৩-৭৪ পর্যন্ত কিংস কলেজ লন্ডনে ফ্যাকাল্টি হিসেবে; ১৯৭৫-১৯৭৮ পর্যন্ত কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৭৮-৮৪ পর্যন্ত সিটি ইউনিভার্সিটি লন্ডনের ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে জ্ঞান বিতরণে যুক্ত ছিলেন। সোয়া লাখ টাকার চাকুরী ছেড়ে ডঃ জামাল ফিরে এসেছিলেন মাতৃভূমিতে। আপনি আমি হলে হয়তো এই ত্যাগস্বীকারটা করতে পারতাম না। “কেন ফিরে এসেছেন?” এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “আমার বাড়ি চিটাগং। এজন্য এখানে জয়েন করি। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। আমি এখান থেকে নিতে আসিনি, দিতে এসেছি।” তিনি কখনো ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতেন না। নিজ মুখেই স্বীকার করেছেন ব্যাপারটা।