“জলওয়ায়ে মীর আহমদ মুনির”

কুতবে আলম, আশেকে রাসুল (দঃ), গাউছে যামান, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাহসূফী সৈয়দ মীর আহমদ মুনিরী (রহ.)’র
সংক্ষিপ্ত পরিচিত

জন্মের শুভ সংবাদ: কুতবে আলম, মাওলানা মীর আহমদ মুনির (রহ)’র জনের পূর্বেই তাঁর আগমনের শুভ সংবাদ দেন হযরত গাউছুল আজম আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র খলিফা, বাহরুল উলুম হযরত শাহ সৈয়দ আব্দুল গণী কাঞ্চনপুরী (রহ.)। তিনি একনা শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.)’র বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে (বাড়ির দিকে মুখ করে বলে উঠলেন, এ বাড়ি থেকে এক সময় এমন একজন আল্লাহর ওলির প্রকাশ হবে, যাঁর মাধ্যমে সময় ভারতবর্ষ ও আশ পাশের মানুষ হেদায়েতপ্রাপ্ত ও ধনদার হবে। তাঁর নাম হবে মীর আহমদ, তাঁকে শাহ্ সাহেব হুজুর নামে সকলে চিনবেন। তোমাদের মধ্যে যারা তার দেখা পাবে তাঁর থেকে দোআ নিবে এবং তাকে অনুসরণ করবে”
কালের আবর্তনে এক সময় হযরত আব্দুর গণী কাঞ্চনপুরী (রহ.)’র মহান বাণী বাস্তবে পরিণত হলো। পরে তাঁর জামাতা (যিনি তাঁর সাথে সেই সময় ছিলেন। যখন তিনি ভবিষ্যৎ বাণী করেন।) তিনি একেবারে বৃদ্ধ অবস্থায় একদা নানুপুর গাউছিয়া মাদ্রাসার সভায় শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.)’র নাম শুনে তিনি সেখানে গিয়ে একথাটি লোক সম্মুখে প্রকাশ করেন এবং তাঁর থেকে ফয়েজ ও দোয়া হাসিল করেন।

জন্ম: চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ উপজেলা ঐতিহ্যবাহি ফটিকছড়ি উপজেলার উত্তর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বিখ্যাত সৈয়দ বাড়ি (মাও, সৈয়দ হাকিম উল্লাহ মিয়াজী)’র বাড়িতে ১৯১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের কোন এক মোবারক দিনে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভী সৈয়দ কাজী শরীফ, মাতা নাজমা খাতুন।

বংশ পরিচয়: তিনি এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও সৈয়দ বংশের সন্তান। তাঁর পূর্বপুরুষেরা আরব তথা ইরাক থেকে দিল্লি আর দিল্লি থেকে চট্টগ্রাম শহরের কাট্টলী নামক স্থানে বসতী স্থাপন করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ মাওলানা সৈয়দ বদিউদ্দিন (রহ.) একজন ইসলাম প্রচারক, সুফী সাধক ও রাসুলে পাক (দ.)’র বংশধর ছিলেন। তাঁর পুত্র মহান আল্লাহর অলি মাওলানা সৈয়দ আজিম উদ্দিন (রহ.) সরকারী কাজী (বিচারক)’র দায়িত্ব পেয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় আসেন। ফটিকছড়ি এসে তিনি নির্জন ও কোলাহল মুক্তস্থান হিসেবে উত্তর রাঙ্গামাটিয়ায় বসতি গড়েন। এখানে তিনি বিচার কাজের পাশাপাশি মানুষকে শরীয়ত ও ত্বরীকরের শিক্ষা দেন কেননা তিনি তাঁর পিতামহ থেকে খিলাফতপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁর ভক্ত-অনুরক্তদের অনুরোধে তিনি তথায় স্থায়ীভাবে বসতি গড়েন। তাঁর সাতজন পুত্র সন্তান ছিলেন। যাঁরা মুত্তাকী ও পরহেজগার ছিল। তন্মধ্যে মাওলানা সৈয়দ হাকিম উল্লাহ (প্রকাশ হাকিম উল্লাহ্ মিয়াজী) ছিলেন বড় বুযুর্গ ও আল্লাহর অলি। তাঁর দুইজন পুত্র সন্তান ছিলেন, মৌলভী সৈয়দ হাসান শরীফ ও মৌলভী সৈয়দ কাজী শরীফ। দুই-পুত্রের মধ্যে সৈয়দ কাজী শরীফ ছিলেন, কুতবে আলম, হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.)’র পিতা।

শিক্ষার্জন ও শিক্ষকতা:
হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.) সর্বপ্রথম নিজবাড়ির পার্শ্ববর্তী ফোরকানিয়া থেকে জাহেরী পড়ালেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উস্তাদ ছিলেন, তাঁর দাদামহ মাওলানা সৈয়দ ফজলুর রহমান শাহ্ (রহ)। কুরআনুল করীমের শিক্ষার্জন শেষে মাদ্রাসায় ভর্তি হন। কেননা তাঁর আম্মাজানের নিয়ত ছিল ছেলেকে একজন আলেম দ্বীন বানাবেন। সেই লক্ষ্যে ফটিকছড়ি সিনিয়র মাদ্রাসায় ভর্তি হন। জামাতে হাশতুম পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে সীতাকুণ্ড বড় দারাগারহাট মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তথায় জামাতে চাহারুম ও পঞ্চুম ২ বছর অধ্যায়ন শেষ করে চট্টগ্রাম দারুল উলুম অলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে জামাতে ছিয়ম থেকে উলা (কামিল) পর্যন্ত সমাপ্ত করেন। ১৯৪০ সালে ২২ বছর বয়সে কৃতিত্বের সাথে শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করেই দ্বীন ও ইসলামের খেদমতে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি ফটিকছড়ি জামেউল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার সিনিয়র মুদারিরস হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ঐ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও সচিব হিসেবে
দীর্ঘ ১৯ বছর দ্বীন ও মাযহার মিল্লাতের খেদমত করে হাজার হাজার আলেম তৈরি করেন।

মতাদর্শ ও আধ্যাত্মিক জগতের পদার্পণ এবং খিলাফত লাভ:
হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.) ছিলেন, একমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত জান্নাতী দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতাদর্শে বিশ্বাসী একজন সাচ্চা আশেকে রাসুল (দ.)। তিনি সুন্নি, হানাফী ও বারীয়া সিলসিলার মুরিদ ও সাত ত্বরীকার খিলাফতপ্রাপ্ত একজন যুগশ্রেষ্ঠ আল্লাহর অলি ।

বায়আত ও খিলাফত লাভ: হযরত শাহ সাহেব কিবলা (রহ) মাত্র ২১ বছর বয়সে বারীয়া সিলসিলার খেলাফতপ্রাপ্ত শায়খুল হাদিস, আল্লামা মুফতি নজির আহমদ শাহ্ (রহ.)’র হাতে প্রথম বায়আত গ্রহণ করেন। মুফতি সাহেব (রহ.)’র ইন্তেকালের পর তাঁর দাদাপীর সাহেব ভারতের আজমগড় নিবাসী, কুতুবুল এরশাদ হযরত শাহ সৈয়দ হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহ.)’র নির্দেশক্রমে হালিশহর নিবাসী, সুলতানুল আউলিয়া, খাজায়ে বাঙ্গাল, হযরত শাহসুফী সৈয়দ হাফেজ মুনির উদ্দিন হালিশহরী (রহ.)’র হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। ত্বরীকতের কঠোর রিয়াজত ও সাধনার মাধ্যমে শরীয়ত, ত্বরীকত, মারেফত ও হাকিকতের উচ্চ মকাম ও গভীর জ্ঞান অর্জন করেন এবং হযরত শাহ সৈয়দ আব্দুল বারী (রহ.)’র প্রদত্ত সাত ত্বরীকতের খিলাফতপ্রাপ্ত হন। তাঁর পীর সাহেব হালিশহরী (রহ.) কলেছেন, “আমার মীর আহমদের কাছে যা পাবে আমার কাছেও তা পাবে, যদি তাঁর কাছে কিছু না পাও তবে আমার কাছেও কিছুই পাবে না”। তিনি খিলাফত লাভের পর সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালে ৩৮ বছর বয়সে ৩৩ জন ভক্ত মুরিদান নিয়ে পবিত্র হজব্রত পালন ও মদিনা শরীফের জিয়ারত করেন। পরে ১৯৬৩ সালে ২য় বারের পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন এবং ১৯৬১ সালে ভারত সফল করে সেখানকার আউলিয়ায়ে কিরাম বিশেষত হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ (রহ.) সহ অসংখ্য অলি আউলিয়ার জিয়ারত করেন।
কারামত:
আউলিয়াগণের কারামত কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ও স্বীকৃত। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর প্রিয় বান্দাদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত অস্বাভাবিক নিদর্শন বা কর্মকান্ডকে মূলত কারামত বলে।
পৃথিবীতে এমন কতগুলো মানুষ আছে যাদের কথায়, কাজে এমন কিছু প্রকাশ পায় যা স্বাভাবিকভাবে কোন মানুষ থেকে প্রকাশিত হয় না।
যাদের কাছ থেকে অলৌকিক নিদর্শন পাওয়া যায় তাদেরকে সমাজে মানুষ বিশেষ ভাবে মর্যাদা প্রদান করেন। ঠিক এমন কিছু ঘটনা হযরত শাহ সাহেব কিবলা (রহ.) থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর অসংখ্য এমন অলৌলিক ঘটনা থেকে একটি ঘটনা নিম্মে বর্ণনা করা হলো।
১৯৭২ সালে উত্তর ফটিকছড়ি ২নং দাঁতমারা ইউনিউনের ছোট বেতুয়া নামক গ্রামের বসবাসকারী হাফেজ ওবাইদুল হক নামক ব্যক্তি হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.)’র মুরিদ ছিলেন। তিনি মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি গ্রামে বিভিন্না ফাতেহা দিতেন। রজব মাসে পবিত্র মেরাজ শরীফের ফাতেহা দেয়ার জন্য আছরের নামাযের পর গ্রামে গেলেন। ফাতেহা দিয়ে ফেরার পথে গভীর জঙ্গলে তাকে একটি বালুক আক্রমন করতে তার দিকে তেরে আসতে লাগলো এ সময় তিনি তার পীর সাহেব হযরত শাহ সাহেব কিবলা (রহ.)কে ডাক দিয়ে বললেন, “হে আমার পীর সাহেব আমাকে রক্ষা করুন”। ঠিক একই সময় রাঙ্গামাটিয়ার হযরত শাহ্ সাহেব (রহ.) মাগরিবের নামাযের জন্য অযু করছিলেন। হঠাৎ তিনি একটি গাছের টুকরা নিয়ে উত্তর দিকে নিক্ষেপ করলেন। এমন সময় তাঁর খাদেম হাফেজ আমিনুল হক পাশে ছিলেন। মাগরিব নামায পড়ে হুজুরের খাদেত হাফেজ আমিনুল হক উত্তর দিকে নিক্ষেপ করা সেই গাছের টুকরোটি খুঁজাখুঁজি শুরু করলেন তবে তিনি কোন ভাবে এই গাছের টুকরটি পেলেন না।
পরের দিন হাফেজ ওবাইদুল হক যোহরের নামাযের সময় রাঙ্গামাটিয়ায় পৌছলেন। হুজরের খাদেম থেকে হুজুরের তালাশ করলেন। তখন হাফেজ আমিনুল হক বললেন, হুজুর একটি কাজে গিয়েছেন। কিছুক্ষণ পর ফিরবেন তখন হাফেজ ওবাইদুল হক বলেন, আমার এ পেকেটটি রাখুন। তখন হাফেজ আমিনুল হক খিয়াল করলেন ঐ পেকেটে সেই গাছের টুকরাটি আছে যা তিনি গতকাল অনেক খুঁজাখুঁজির পর পায় নি। সাথে জানতে চাইলেন এই গাছের টুকরো আপনি কোথায় পেলেছেন। তখন ওবাইদুল হক বলেন, “গতকাল মাগরিবের সময় ফাতেহা দিয়ে আসার পথে আমাকে বালুক আক্রমণ করেছিল, তখন আমি আমার পীর সাহেবের সাহায্য চাইলাম সাথে সাথে দেখতে পেলাম যে এই গাছের টুকরোটি বালুকের মাথায় এসে পড়ল! বালুক বেহুশ হয়ে পড়ল। আমি গাছের টুকরোটি নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেলাম”। হুজুরের উছিলায় আল্লাহর অশেষ দয়ায় আমি প্রাণে বেচে গেলাম। তাই হুজুরের শুকরিয়া আদায় করতে আজ হুজুরের দরবারে এসেছি।

এমনভাবে তিনি অনেক অলৌকিক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন এবং মানুষকে আল্লাহর প্রতি আহ্বান করেছেন ও দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন।
অত.এব, এমন কামেল পীরের অনুসরণ করা আমাদের একান্ত জরুরী।

ইন্তেকাল : হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ) ১৯৭৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ৭ রবিউল আউয়াল ১০৯৮ হিজরী মুতাবেক ওরা ফাল্গুন ১৩৮৪ বাংলা রোজঃ বুধবার বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে গমন করেন। ওফাতকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।

বর্তমান পীর সাহেব কিবলার পরিচিতি:
শাহ্ মীর মুনিরীয়া দরবার শরীফের বর্তমান পীর সাহেব কিবলা ও হযরত শাহ্ সাহেব কিবলা (রহ.) ‘র বড় শাহজাদা পীরে ত্বরীকত হযরতুলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ আবু জাফর মুনিরী (মঃজিঃআঃ) ১৯৫৫ সালের ২৫ মে জন্মগ্রহণ করেন। নিজবাড়ির ফোরকানিয়া মাদ্রাসা থেকে কুরআন শিক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা হয়। অতঃপর ফটিকছড়ি জামেউল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে নানুপুর গাউছিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তথায় ৭ম ও ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যায়ন করে ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম ওয়াজেনিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল সমাপ্ত করেন। ১৯৭৫ সালে নানুপুর গাউছিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম, ১৯৭৭ সালে ফাযিল ও ১৯৭৯ সালে নাজিরহাট জামেয়া মিল্লিয়া আহমদিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পরীক্ষা দিয়ে কৃতিত্বের সাথে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন।

কর্মজীবনে পদার্পণ:
১৯৭৬ সালে ফটিকছড়ি জামেউল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসায় সিনিয়র মুদারিবস হিসাবে যোগদান করেন এবং নিজেকে দ্বীনের খেদমতে নাস্ত করেন। অতঃপর সরকারী কাজী (নিকাহ্ রেজিঃ) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সামাজিক কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।

বায়জাত ও খিলাফত:
বর্তমান হুজুর কিবলা (ম.জি.আ) ১৯৭৩ সালে একটি স্বপ্ন দেখেন। এই স্বপ্নের কথা তাঁর আব্বা হুজুরকে জানালে তিনি ত্বরীকতের অজিফা আদায় করার নির্দেশ দেন। দীর্ঘদিন অজিফা আদায় করে বায়আত গ্রহণ করেন এবং সবক আদায় করতে থাকেন। ১৯৭৮ সালে তাঁর আব্বা হুজুর কিবলা (রহ.) ইন্তেকাল করেন। তখন তিনি মাকামে তওবাহ পর্যন্ত সবক আদায় করেন। আব্বা হুজুরের ইন্তেকালের প্রায় ছয় মাস পর একদিন রাতে স্বপ্নযোগে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে হালিশহর দরবার শরীফের পীর শামশুল উলামা হযরত কাজী সিরাজুল মোস্তফা (বই)’র নিকট বায়াত গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন ত্বরীকতের রিয়াজত ও কঠোর সাধনার মাধ্যমে ১৯৮০ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি খিলাফতপ্রাপ্ত হন। খিলাফত লাভের ৩৫ দিনের মাথায় ১৯৮০ সালের ২০ নভেম্বর তিনি বার্মা (মায়ানমার) সফর করেন। সেখানে তিনি মানুষদেরকে বায়আত করান ও ত্বরীকতের শিক্ষা প্রদান করেন এবং খানেকাহ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাঁর মুরিদ হযরত আজিজ উদ্দিন (রহ.) কে খিলাফত দায়িত্ব প্রদান করে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ১৮৮২ সালে ত্বরীকতের কার্যক্রম ও দ্বীন প্রচারের লক্ষ্যে আঞ্জুমানে গাউছিয়া বারীয়া মীর মুনিরীয়া আহমদিয়া বাংলাদেশ নামক একটি আধ্যাত্মিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৫ সালের ৩০ মার্চ তিনি ২য় বারের মত ত্বরীকরের এশায়তের লক্ষ্যে মায়ানমার সফল করেন। ২০১৪ সালে শাহ্ মীর মুনিরীয়া যুব সংঘ বাংলাদেশ নামক অরাজনৈতিক ত্বরীকত ভিত্তিক, সেবামূলক, মানবিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। পাশাপাশি সামাজিক শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের মানসে ২০১৫ সালে গাউছিয়া আহমদিয়া মীর ছাহারা মাদ্রাসা নামক একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যার মাধ্যমে এলাকার গরীব, মেধাবী ও এতিম ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছে এবং শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে যুব সমাজকে সঠিক আকিদাহ ও উত্তম চরিত্র গঠনের লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রাখতে হুজুর কিবলা (ম.জি.আ)কে আল্লাহ পাক হায়াত দান করুন ও সকল কাজে সফলতা দান করুন। আমিন।