মিয়ানমারে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগ দেয়ার আইন ঘোষণা

নতুন একটি আইন জারি করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। এই আইন অনুযায়ী, দেশের সব তরুণ-তরুণীকে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতে হবে। দেশ যখন টালমাটাল অবস্থা, জাতিগত বিদ্রোহীদের তোপের মুখে দাঁড়াতে পারছে না সেনাবাহিনী, তাদের অনেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছেন, তখন সেনাবাহিনীর এমন আইন জারির ফলে এটা প্রতীয়মান যে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আসলেই নাজুক অবস্থায় আছে। তাদের প্রয়োজন সেনাবাহিনীতে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং তাদেরকে যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো। এ জন্যই হয়তো এমন নীতি ঘোষণা করেছে তারা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। তখন থেকেই তারা বিরোধিতার মুখে। তবে সম্প্রতি জাতিগত বিদ্রোহীদের তীব্র চাপে রয়েছে সামরিক জান্তা। একের পর এক যুদ্ধে বিদ্রোহীদের কাছে হেরে যাচ্ছে তারা। বাংলাদেশ সীমান্তের সঙ্গে রাখাইনে সামরিক জান্তাকে একের পর এক পরাস্ত করছে আরাকান আর্মি।

ওই যুদ্ধের উত্তাপ বাংলাদেশে এসেও লেগেছে। সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সতর্ক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
সামরিক জান্তা শনিবার ঘোষণা দেয় যে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের জন্য সেনাবাহিনীতে সামরিক কমান্ডে কমপক্ষে দুই বছর দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এক বিবৃতিতে সামরিক জান্তা বলেছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারা, উপধারা, প্রক্রিয়া, নির্দেশ, নোটিফিকেশন এবং নির্দেশনা জানিয়ে বিবৃতি দেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বড় পরাজয়ের শিকার হয়েছে সামরিক বাহিনী। গত বছরের শেষের দিকে শান রাজ্যের জাতিগত তিনটি বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপ চীনের সঙ্গে বর্ডার ক্রসিং এবং সেখান দিয়ে যে বাণিজ্য হয় চীনের সঙ্গে সেই সড়ক দখল করেছে। গত মাসে চিন রাজ্যে পালেতোয়া শহর, মীওয়া সামরিক ঘাঁটি দখল করে আরাকান আর্মি। সামরিক জান্তা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়েছে সাবেক একজন জেনারেল মিন্ট শয়ে’কে। তিনি এর আগে সতর্ক করেছেন এই বলে যে, যদি এই যুদ্ধকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে সরকার, তাহলে দেশ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালনের একটি আইন চালু হয়েছিল মিয়ানমারে ২০১০ সালে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি। এই আইনের অধীনে জরুরি অবস্থার সময়ে সেনাবাহিনীতে এই দায়িত্ব পালনের সময় ৫ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যাবে। এই দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলে একই সময় পর্যন্ত জেল হতে পারে।