অগ্নিদুর্ঘটনা রুখতে পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতি

অগ্নিদুর্ঘটনা রুখতে ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত প্রেসক্রিপশন বেজড পদ্ধতির বদলে উন্নত দেশগুলো পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতিতে ঝুঁকছে। কারণ প্রেসক্রিপশন বেজড পদ্ধতিতে ঝুঁকি দেখা হয় না, সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
শনিবার (৬ জুলাই) ‘কর্মক্ষমতাভিত্তিক ভবনের অগ্নি সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিডিইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন হয়।

ড. মুনাজ বলেন, পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতিতে একটি ভবনের বাসিন্দারা আগুন থেকে কীভাবে বাঁচবেন সেটি ঠিক করে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বাসিন্দারা জানবে আগুন লাগলে তারা কীভাবে নিজেদের সুরক্ষায় রাখবে।

‘পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতিতে জীবনের নিরাপত্তা, পরিবেশ, ঝুঁকি, আগুন লাগার পর ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ, ধোঁয়ামুক্ত জোন ঠিক করে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, আগুনের তিনটি ধাপের মধ্যে আগুন যখন প্রি ফ্ল্যাশ ওভারে থাকে, তখন মানুষ ও সম্পদ বাঁচানো সম্ভব। আগুন ফ্ল্যাশ ওভার এবং পোস্ট ফ্ল্যাশ ওভারে চলে গেলে সবকিছু কঠিন হয়ে যায়।

ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, আগুন প্রি ফ্ল্যাশ ওভারে থাকে তিন থেকে পাঁচ মিনিট। কিন্তু এত অল্প সময়ে ফায়ার ব্রিগেড আসতে পারে না। আসতে আসতে আগুন ফ্ল্যাশ ওভার ও পোস্ট ফ্ল্যাশ ওভারে চলে যায়। তখন মানুষ ও সম্পদ রক্ষা কঠিন হয়ে যায়। ফায়ার বিগ্রেড আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজটা করে।
এক্ষেত্রে পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতিতে অনুসরণ করতে হবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থা এ পদ্ধতিতে অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। কারণে এ পদ্ধতিতে ফায়ার বিগ্রেড ছাড়া সুরক্ষার বিষয়টি জোর দেওয়া হয়।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য এই অধ্যাপক বলেন, ‘পারফরম্যান্স বেজড পদ্ধতিতে প্রতিটি বিল্ডিংয়ে ফায়ার মার্শাল রাখতে হবে। এছাড়া সাব ফায়ার মার্শালও থাকবে। ফায়ার মার্শাল আগুন যখন প্রি ফ্ল্যাশ থাকবে, তখন কীভাবে আগুন বন্ধ করতে হবে সবকিছু জানবে। এ ছাড়া ভবনের কোথায় কী আছে সব জেনে রাখবে।’

তিনি বলেন, উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফায়ার ডিজাইন বা ফায়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট চালু করা হয়েছে। আমাদের দেশেও সেটি করতে হবে। এখানে আগুন থেকে কীভাবে জীবন, সম্পদ, পরিবেশ ও অর্থনীতিকে রক্ষা করা যায় এসব বিষয় অর্ন্তভুক্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আইইবি’র সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মুনসুর, আইইবির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী এম নুরুল হুদা, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, আবুল কালাম হাজারী, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন প্রমুখ।