গৃহ বা ঘর প্রত্যেকটা মানুষের কাছে শান্তির জায়গা। আর সেই ঘর যদি হয় দেশীয় শিল্পে দেশীয় রূপে দেশীয় সংস্কৃতিতে সাজিয়ে রাখা তাহলে কতই না ভালো লাগে ! প্রতিটা মানুষের গৃহের সাজই তার রুচির ও আভিজাত্যের পরিচয় দেয়। দেশীয় সংস্কৃতিতে ঘর সাজালে দেশীয় ভাবের পাশাপাশি আভিজাত্য, শৈল্পিকতা ও নান্দনিকতা ফুটে উঠবে।
অন্দর সজ্জায় গাছ
বৃক্ষরোপণ করতে কম বেশি সবাই পছন্দ করে। বারান্দার দিকে বৃক্ষরোপনের চর্চা হয় বেশি। তবে ঘরের কোন একটি দেয়ালে যদি কিছু গাছ ঝুলিয়ে রাখা যায় বা কোন একটা দিকে ফুলদানি বা টবের ভিতরে গাছ রাখা যায় তাহলে যেন মনে হবে ঘরে এক টুকরো সবুজ মধ্যমণি হয়ে রয়েছে। এছাড়াও ঘরের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ফুলদানিতে তাজা ফুল রাখতে পারেন। এতে করে ঘরে তাজা ফুলের খুব সুন্দর একটা আভা তৈরি হবে। আর যত যাই হোক তাজা ফুল দেখতে অবশ্যই আর্টিফিশিয়াল ফুলের থেকে সুন্দর।
অন্দর সজ্জায় মাটি
মাটির জিনিসপত্র আমাদের দেশীয় শিল্পের একটি বড় চিহ্ন বলা যেতে পারে। মাটির জিনিসপত্র দিয়ে ঘর সাজালে ঘরে দেশীয় শৈল্পিকতা ফুটে উঠবে। মাটির জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে আয়না লাগানো যেতে পারে। এছাড়াও মাটির অনেক ঝুলন্ত শোপিস লাগানো যেতে পারে চাইলে মাটির কোন মূর্তিও ঘরে লাগাতে পারেন।
দেশীয় দেওয়াল
ঘরের দেওয়ালের কোণ যেন দেশীয় সংস্কৃতির কথা বলবে এমন ভাবেই তৈরি হোক ঘরের দেয়ালগুলো। তথাকথিত ক্যানভাস অবশ্যই লাগাবেন তবে সে ক্যানভাস যেন কোন একটা নির্দিষ্ট গল্প বলে এরূপ চিন্তা করে লাগাতে পারে যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধর কিছু সুন্দর ছবি লাগানো যেতে পারে। বাংলাদেশের পতাকা, রিকশাচিত্র, সিনেমার পোস্টার এগুলো আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের জিনিসগুলো দেয়ালে লাগানো যেতে পারে।
দেশীয় খাবার ঘর
দেশীয় খাবার ঘরের ক্ষেত্রে খাবার টেবিলটা দেশীয় স্টাইলেই তৈরি হোক। কাঁচ বা সিরামিক এই ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার না করে মাটি, কাঁসা, তামা কিংবা স্টিলের বাসন-কোষন ব্যবহার করা যেতে পারে। টেবিলের রানার হিসেবে পাটের কিংবা নকশী রানার ব্যবহার করতে পারেন। টেবিলে একটি বেতের ঝুরি এবং সেখানে কিছু ফল রাখতে পারেন।
গৃহে দেশীয় আসবাব
গৃহে দেশীয় আসবাব বলতে বেত বা বাঁশের কোন ফার্নিচার রাখতে পারেন। বারান্দায় কিংবা লিভিং রুমে একটি বেতের দোলনা রাখা যেতে পারে। বেতের বা বাঁশের বুক সেলফ রাখতে পারেন। এছাড়া কোন একটি ঘর সম্পূর্ণ বেদ বা বাঁশের ফার্নিচার দিয়ে সাজাতে পারেন। দেশীয় আসবাবের ক্ষেত্রে মোড়া বিষয়টা একদমই বাদ দেওয়া যাবে না।
দেশীয় শিল্প ধরে রাখতে পারাও এক ধরনের সৃজনশীলতার কাজ। সময়ের সাথে সাথে রুচির পরিবর্তন হয়, চাহিদার পরিবর্তন হয়। তবে সেই পরিবর্তনকে যদি দেশীয় সাজে নতুন ভাবে রূপান্তর করা যায় তবে দেশীয় সংস্কৃতি সমৃদ্ধ থাকবে।