গাজায় নিহত ১৩ হাজার ৩০০, হামাসের সঙ্গে চুক্তির আশা মার্কিন প্রেসিডেন্টের

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩০০ জনে। নিহতদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ শিশু রয়েছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি দেশটির সেনারা গাজার উত্তরাঞ্চলে গ্রাউন্ড অফেন্সিভও চালিয়ে যাচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

বৃটিশ গণমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, সংঘাত অব্যাহত থাকলেও ইসরাইল ও হামাস একটি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই আশার বাণী শুনিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেই। সোমবার বাইডেন বলেন, উভয় পক্ষ একটি চুক্তির কাছাকাছি আছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি জিম্মি নিয়ে সমঝোতার বিষয়ে বলেন, আমরা আগে যেখানে ছিলাম তার চেয়ে কাছাকাছি আছি।

ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াহও। মঙ্গলবার রয়টার্সের কাছে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি। হানিয়াহ বলেন, হামাস কর্মকর্তারা ইসরাইলের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছেন।

এরই মধ্যে তারা কাতারের কর্মকর্তাদের কাছে তাদের জবাব দিয়ে দিয়েছেন।
তবে জিম্মি ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে হামাস কি দাবি উত্থাপন করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাদের হাতে দুই শতাধিক জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ১৫ নভেম্বর প্রথম বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দেয় যে, গাজায় তিন দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ৫০ বন্দীকে মুক্তি দিতে চায় হামাস। ইসরাইল-হামাসের মধ্যে এ নিয়ে এক চুক্তিতে পৌঁছাতে চান কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা। আলোচনার বিষয়ে অবগত কাতারের এক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির ওই সময় গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতির সাধারণ রূপরেখায় রাজি হয়েছে। কিন্তু ইসরাইল এখনো এই চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছে।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য সিনিয়র রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখা করেছেন জিম্মি হওয়াদের স্বজনরা। তাদেরকে সরকারের তরফে ধারণা দেয়া হয়েছে যে, হামাসকে ধ্বংস করা ও জিম্মিদের মুক্ত করা ইসরাইলের জন্য ‘সমান গুরুত্বপূর্ণ’। নেতানিয়াহু এক্সে করা একটি পোস্টে বলেন, তিনি ওই বৈঠকে পরিবারগুলোর বেদনা শুনেছেন। তিনি বলেছেন যে জিম্মিরা সর্বদা আমার হৃদয়ে আছেন। তাদের ফিরিয়ে আনা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। আমরা আমাদের জিম্মিদের বাড়ি ফিরিয়ে আনা, হামাসকে ধ্বংস করা এবং গাজার সকল হুমকি ধ্বংস না করা পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করব না।

এদিকে যখন হামাস-ইসরাইল একটি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে ইসরাইলকে কড়া হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছে ইরান। দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসির কমান্ডার ইন চিফ মেজর জেনারেল হোসাইন সালামি ঘোষণা দিয়েছেন যে, ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনি যুবকদের ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের শক্তি ধ্বংস করার যুদ্ধে রয়েছে। এভাবেই তারা ক্রমান্বয়ে প্রভাব বিস্তার করতে থাকবে।
উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধ করতে ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরাইলি সেনারা। বহু সেনা নিহতের পাশাপাশি কয়েক ডজন সমরযান হারিয়েছে দেশটি। ইরান থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়েই এই প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে হামাস। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরেক ইরানপন্থী সংগঠন ইসলামিক জিহাদও।