কক্সবাজারে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় হামুন

ঘুর্ণিঝড় হামুনের তান্ডবের পর বিদ্যুৎবিহীন কক্সবাজার       ফটো কার্টেসী : মনজুরুল আলম মঞ্জু

ঘূর্ণিঝড় হামুন তাণ্ডব চালিয়েছে কক্সবাজার জেলায়। আড়াই ঘণ্টার এই তাণ্ডবে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা। এর মধ্যে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে পুরো কক্সবাজার শহর। এ ছাড়া উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলে। এ সময়ে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় বহু গাছপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত ক্ষয়-ক্ষতিপূরণ পরিমাণ যায়নি। হামুনের তাণ্ডবে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে পুরো কক্সবাজার শহর।’এর আগে হামুনের প্রভাবে সকাল থেকেই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয় কক্সবাজারে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভারী বৃষ্টি ও বাতাস শুরু হয়। এতে গাছপালা উপড়ে ও ডালপালা ভেঙে পড়তে থাকে। এরপর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পুরো জেলা। ভোলার ওপর দিয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের অতিক্রমের কথা ছিল। তবে গতিপথ পাল্টে ঝড়টি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে আগামী ১০ ঘণ্টার মধ্যে অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া দফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। আজিজুর রহমান বলেন, হামুন গতিপথ পাল্টেছে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশটি উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। তিনি জানান, বর্তমানে বাতাসের বেগ ৭০-৮০ কিলোমিটার। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে সাগর উত্তাল রয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, মোংলা ও পায়রাকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এদিকে আবহাওয়ার সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চাল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।