খালি পেটে দুধ খাওয়ার উপকারিতা জানলে অবাক হবেন

দুধ গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি ও প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। দুধের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। এটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী পানীয়। দুধে আছে প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান পেশিকে মজবুত ও শক্ত করে। পাশাপাশি শরীরে পুষ্টি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

দুধ পান করা শরীরের জন্য ভালো। তবে সঠিক পুষ্টি পেতে নিয়ম মেনে দুধ পান করতে হবে। এক কাপ (২৪৪ গ্রাম) গরুর দুধে ক্যালোরি ১৪৬, প্রোটিন ৮ গ্রাম, চর্বি ৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৮ শতাংশ, ভিটামিন ডি ২৪ শতাংশ, রিবোফ্লাভিন (B2) ২৬ শতাংশ, ভিটামিন বি ১২- ১৮ শতাংশ, পটাসিয়াম ১০ শতাংশ, ফসফরাস ২২ শতাংশ, সেলেনিয়াম ১৩ শতাংশ রয়েছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

চলুন জেনে নিই খালি পেটে দুধ খাওয়ার উপকারিতা-

প্রোটিনের ভালো উৎস

দুধ প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস, মাত্র এক কাপে ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এটি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে। দুধকে একটি ‘সম্পূর্ণ প্রোটিন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার অর্থ এটিতে আপনার শরীরের সর্বোত্তম স্তরে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে।

দুধে দুটি প্রধান ধরনের প্রোটিন পাওয়া যায়- কেসিন এবং হুই প্রোটিন। উভয়ই উচ্চ মানের প্রোটিন হিসেবে বিবেচিত হয়। গরুর দুধে পাওয়া প্রোটিনের সিংহভাগই কেসেইন তৈরি করে, যা মোট প্রোটিনের ৭০-৮০% থাকে। হুই প্রোটিনে রয়েছে ব্রাঞ্চড-চেইন অ্যামিনো অ্যাসিড লিউসিন, আইসোলিউসিন এবং ভ্যালাইন, যার সবগুলোই স্বাস্থ্য উপকারিতার সাথে যুক্ত। ব্রাঞ্চড-চেইন অ্যামিনো অ্যাসিডগুলি পেশি তৈরি, পেশির ক্ষতি রোধ এবং অনুশীলনের সময় জ্বালানি সরবরাহ করতে বিশেষভাবে সহায়ক।

বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়ামের পরে দুধ পান করলে আপনার পেশি আরও শক্তিশালী হবে, শক্তি বৃদ্ধি করে, এমনকি পেশির ব্যথাও হ্রাস করতে পারে।

হাড়ের জন্য উপকারী

নিয়মিত দুধ পান করলে আপনার হাড় সুস্থ থাকবে। এটি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন কে২ সহ পুষ্টির শক্তিশালী উৎস। আর এই পুষ্টিগুলো সুস্থ হাড় বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়।

দুধের বিভিন্ন পুষ্টিগুলো হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করতে পারে এবং ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়। দুধে থাকা ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীরা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ খেতে পারেন।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ খাওয়ার সাথে স্থূলতার ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে। মূলত দুধে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা ওজন কমাতে এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ এর উচ্চ-প্রোটিন সামগ্রী আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ বোধ করতে সহায়তা করে, যা অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। অপরদিকে দুধে সংযোজিত লিনোলিক অ্যাসিড চর্বি ভাঙতে পারে এবং চর্বি উৎপাদনে বাধা দিয়ে ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ

রাতে নিয়মিত লো ফ্যাট যুক্ত দুধ প্রতিদিন পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুধে থাকা প্রোটিন উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে হার্ট সুস্থ থাকে।

স্বাস্থ্যকর ত্বক

দুধে থাকা ভিটামিন বি১২ ও অন্যান্য উপাদান ত্বককে স্বাস্থ্যকর, নরম ও তরতাজা রাখতে সহায়তা করে। ত্বক সুন্দর রাখতে চাইলে প্রতিদিন দুধ পান করুন।