চীনকে ‘আয়রন ব্রাদার’ বললেন পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী

৭৪তম জাতীয় দিবসে চীনকে ‘আয়রন ব্রাদার’ আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার। রোববার তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এবং দেশটির নাগরিকদের অভিনন্দন জানান। চীনের অর্জনের জন্য পাকিস্তান গর্বিত বলেও জানান তিনি। এ সময় তিনি শান্তি ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইঞ্জিন বলে অভিহিত করেন বেইজিংকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গিও চীনের জাতীয় দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভিডিও ম্যাসেজে তিনি বলেছেন, চীনের জাতীয় দিবসের উৎসবের অনুপ্রেরণাকে উপভোগ করে পাকিস্তানি জনগণও। এই বছর এবং সামনে আরও অনেক বছর সব পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। এতে আমাদের জন্য এবং বিশ্বের জন্য শান্তি ও অগ্রগতি আসবে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং দেশটির নাগরিকদের প্রতি উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি। এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেছেন, সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং গর্বিত জাতি হিসেবে চীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় পাকিস্তান।

চীন-পাকিস্তানের মধ্যে লৌহকঠিন বন্ধুত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন।
৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে এ সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার। এ সময়ে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। বলেছেন, বৃহত্তর শক্তির প্রতিযোগিতায় কোনো পক্ষ নেয়া ছাড়াই পাকিস্তান তার নিজের স্বার্থের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। চীনকে ধারণ করার বিষয়ে পশ্চিমারা খুব বেশি আচ্ছন্ন রয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে পাকিস্তান নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি। বলেন, চীন হলো তার সর্ব অবস্থায় বন্ধু এবং কৌশলগত অংশীদার। কাকার আরও বলেন, এটা কোনো শীতল যুদ্ধ নয়। এখানে পর্দা দিয়ে আলাদা করার মতো লোহার আস্তরণ নেই। এখানে কোনো অস্বচ্ছতা নেই। কী ঘটছে তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান এমন একটি পথ বেছে নিচ্ছে যা পশ্চিম এবং রাশিয়া, চীনের প্রতিযোগিতা এড়িয়ে চলে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে বিরোধ তাতে কোনো শিবিরে যুক্ত হতে চাইছে না পাকিস্তান।

ওদিকে ভবিষ্যতে কেমন একটি বৈশ্বিক সম্প্রদায় গড়ে তোলা হবে সে বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি সহ একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে চীন। ২০১৩ সালে এই ধারণা প্রস্তাব করেছিলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ধারণা বিশ্বকে সঠিক পথ দেখাচ্ছে। গত দশকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ঐক্যমত বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওদিকে গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে বেলুচিস্তানের প্রেস কোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নং রং। তিনি বলেন, পাকিস্তান এবং চীন পরস্পরের উপকারভোগী সহযোগিতা করছে। এতে পাকিস্তানের সব মানুষ সুবিধা পাবেন। পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ককে ‘লৌহকঠিন বন্ধুত্ব’ উল্লেখ করে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, দুই দেশ সব সময় একে অন্যকে সমর্থন করছে। কঠিন সময়ে একত্রিত হয়েছে।

অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে ইসলামাবাদকে চীন জুলাইয়ের শেষে কমপক্ষে ২৪০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। এই অর্থ দিয়েছে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়না। এক্সে পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ওই ব্যাংক এই অর্থ দুই বছরের জন্য দিয়েছে। ২০২৪ অর্থবছরে দেবে ১২০ কোটি ডলার। বাকি অর্থ দেবে ২০১৫ অর্থবছরে।