তত্ত্বাবধায়কে ফেরার উপায় নেই, নির্বাচিত সরকারই ক্ষমতা হস্তান্তর করবে: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়টিকে বিতর্কিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই ভায়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রচারিত ভয়েস অব আমেরিকার (ভোয়া) বাংলা সার্ভিসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‌‌‘এখন ভোটের অধিকার জনগণের হাতে। কাজেই নির্বাচিত সরকারই নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করবে। এখন আর পেছনে ফেরার উপায় নেই। কারণ আমাদের সংবিধান জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করে। এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে একটি নির্বাচিত সরকার (ক্ষমতায়) আসবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপির দাবির বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এক সময় তারা (বিএনপি) তত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করতো, কিন্তু এখন তারা দাবি করছে, কিন্তু ভবিষ্যতে তারা কী করবে তা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া বিএনপি এই ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা হাইকোর্টের বিচারকদের বয়স বাড়ানো, ১.২৩ কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ ইচ্ছেমতো সরকার বসানোর জন্য নানা ধরনের অপকর্ম করেছে। কোনোটাতেই কাজ হয়নি, কারণ জনগণ তা মেনে নেয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিএনপি কখনোই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করেনি। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘তারা হঠাৎ তত্ত্বাবধায়কের দাবি কেন তুলছে? প্রশ্ন হল- তাদের নেতা কে? জনগণ কাকে ভোট দেবে? জনগণ এমন একজন নেতা দেখতে চায়, যিনি ভোট দিলে আগামীতে এই দেশ পরিচালনা করবেন। তারা কি এমন কাউকে সামনে আনতে পেরেছেন, যাকে নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন?’

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় তখন হাইকোর্টের একটি রায়ের পরে তা করা হয়। এতে বলা হয়েছিল যে বাংলাদেশে কোনো অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না এবং একটি নির্বাচিত সরকারকে অন্য নির্বাচিত সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং সামরিক আইনের মাধ্যমে জেনারেল এরশাদের শাসনকেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ওই রায়ে বলা হয়েছে- ‘নির্বাচিত নয় এমন কেউ সরকারে আসতে পারবে না’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই রায় ঘোষণা করেছে। ‘সেই বিবেচনায় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই রায় কার্যকর করা হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় থেকে আমরা কীভাবে সরে আসব বা কীভাবে আবার সংবিধান সংশোধন করব?