শেষ ম্যাচেও ‘বিশ্বকাপ পরীক্ষা’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দলকে নেতৃত্ব দেবেন বাঁ-হাতি ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে। সিরেজের শেষ ম্যাচের জন্য দলে ফেরানো হয়েছে বিশ্রামে থাকা মুশফিকুর রহীম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামকে। যদিও তাসকিনের খেলার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এই ম্যাচে বিশ্রামে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে নেতৃত্ব দেয়া লিটন দাস। এ ছাড়াও ইনজুরি থেকে ফেরা তামিম ইকবাল। ব্যর্থ হওয়াতে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার আর পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানকেও রাখা হয়েছে বিশ্রামে। বিসিবি এখনো অনুষ্ঠানিকভাবে আসন্ন বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেনি। কাল টাইগারদের ভারতের জন্য দেশ ছাড়ার কথা। তবে দল ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্তেও চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

তাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও দলে আনা হয়েছে বড় পরিবর্তন। দলের নেতৃত্ব পাওয়া শান্তও ফিরেছে ইনজুরি থেকে। এশিয়া কাপে দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটি হাঁকনো এই ব্যাটার। নেতৃত্বের সুযোগ পেয়ে দারুণভাবে রোমাঞ্চিত এই ক্রিকেটার। শান্ত বলেন, ‘আলহামদুল্লিলাহ। আমার মনে হয় যে আজ ক্রিকেট প্লেয়ার হিসেবে আমার জন্য অনেক প্রাউডের ব্যাপার। সঙ্গে সঙ্গে আমার ফ্যামিলি মেম্বারদের জন্য অনেক প্রাউডের ব্যাপার। ক্রিকেট বোর্ড এই অপরচুনিটিটা তৈরি করে দিয়েছেন খুবই এক্সাইটেড এবং এনজয় করবো ইনশাল্লাহ কালকে (আজ)।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাটিতে তিন সিরিজের দুটি জয় পেয়েছে টাইগাররা। শেষটি ছিল ২০১৩ তে, বলার অপেক্ষা রাখে না ১০ বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম এই ক্রিকেট শক্তির বিপক্ষে দেশের মাটিতে জয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছিল টাইগাররা। তবে চলতি সিরিজে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয়টিতে হেরে যায়। দুটি ম্যাচেই ছিল টাইগার বোলারদের দারুণ দাপট। বৃষ্টির কারণে প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ না হলেও দ্বিতীয়টিতে ব্যাটিং ব্যর্থতা চরমভাবে চোখে পড়ে। হেরে যায় ৮৬ রানের বড় ব্যবধানে। ২৫৪ রানের জবাব দিতে নেমে লিটন দাসের দল মাত্র ১৬৮ রানেই হারিয়েছিল সবক’টি উইকেট। গেল এক বছর ধরে বাংলাদেশ দলের অন্যতম চিন্তার নাম ব্যাটিং। শেষ ম্যাচেও তাই হারের শঙ্কা তো আছেই। এ নিয়ে নয়া অধিনায়ক বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ আমার কাছে মনে হয় আনন্দের। খুব ভালো লাগতেছে এমন অপরচুনিটি এবং এমন অবস্থায় আমাদের টিম। আছে সামনে ওয়ার্ল্ড কাপ। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয় যদি আমরা এই জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে আমি যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারি ম্যাচটা আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের টিম একটা ভালো অবস্থায় থাকবে। ২০০৮-এ কি হয়েছিল, সেটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার অপশন নাই। মেইন যে জিনিসটা হলো যে, কীভাবে কালকের ম্যাচটা আমরা খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারি।’

অন্যদিকে কিউইদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি টাইগারদের জন্য দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ ম্যাচের পরদিনই বিশ্বকাপ দল যাবে ভারত। এ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘যেকোনো সময় জয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, দেশের হয়ে খেলা অনেক গর্বের। দেশের হয়ে যখন আমরা ম্যাচ জিতবো, এটা আমার দেশের জন্যই ভালো হবে। তো আমার মনে হয় যে, হ্যাঁ সামনে বিশ্বকাপ আছে। এই ম্যাচটা যদি আমরা জিতি তাহলে তো টিমের মধ্যে অবশ্যই ভালো লাগা কাজ করে। বাট যদি খারাপ রেজাল্ট হয়, এটা যে খুব বেশি ওয়ার্ল্ড কাপে এফেক্ট ফেলবে এটা আমার কাছে মনে হয় না। সো, প্রত্যেকটা ম্যাচ আমরা জেতার জন্য খেলি এবং যেই টিমের বিপক্ষে খেলি, যেই সিচুয়েশনে খেলি আমরা জেতার জন্য খেলি এবং জেতার জন্য আমরা খেলার চেষ্টা করবো।’

এ ছাড়াও এই ম্যাচেও টাইগাররা মাঠে নামবে তৃতীয় প্রতিপক্ষ হিসেবে বৃষ্টির শঙ্কাকে সঙ্গী করে। তাই উইকেটটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উইকেট নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় যে, প্রিপারেশন ওয়াইজ লাস্ট অনেকদিন ধরেই এই জায়গায় কাজ করতেছি। এশিয়া কাপে ম্যাচ খেললাম, তার আগে সিরিজ খেলেছি। তো আমাদের আরেকটা অপরচুনিটি যে এই ম্যাচটা আমরা কতো ভালোভাবে শেষ করতে পারি। আর উইকেট বলবো যে, আসলে উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ভালো উইকেটও হতে পারে আবার খারাপ উইকেট হতে পারে। আমরা জানি না আসলে। বাট আমরা সিচুয়েশন চিন্তা করে দেখতে পারি, উইকেট হয়তো ভালোই হবে। আমাদের দুই ধরনের প্রিপারেশনই থাকা দরকার। ইন্ডিয়াতে কিছু কিছু উইকেট আছে যেখানে ওই রকম বড় স্কোরও হয় না। কালকে যে রকম উইকেট থাকবে ওই অনুযায়ী আমরা ম্যাচটা খেলার চেষ্টা করবো এবং আমি মনে করি যে, ওই উইকেট অনুযায়ী যদি ম্যাচটা শেষ করতে পারি, তাহলে আমরা ওইভাবে প্রিপায়ার হইতে পারবো।’