২০২২, অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ছিল সাফল্য পাওয়া নিয়ে সন্দেহ। তবে কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম বদলে দেন বাংলাদেশকে। প্রথমবারের মতো মূল পর্বে দুই ম্যাচে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। যা টাইগারদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় সাফল্য। শুধু তাই নয় হারলেও ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করে টাইগাররা। তবে এই ভারতীয় কোচকে লম্বা সময়ের জন্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আগামী মাসেই ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই আসরেও নিজেদের ইতিহাস বদলাতে চায় দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা বিসিবি। আর সেখানে সাফল্য পেতে আবারো দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে শ্রীমরামকে। বলার অপেক্ষা রাখে না ভারতের মাটিতে সফল হতে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে একজন ভারতীয়কেই।
তার অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কাজে লাগাতে চায় টাইগাররা। গতকাল বিসিবি জানায়, টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন শ্রীরাম। এ বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপের জন্য তাকে কোচিং প্যানেলে নিয়েছি। তিনি দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন।’
ভারতে ৫ই অক্টোবর শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। বাংলাদেশ দলের প্রথম ম্যাচ ধর্মশালায় ৭ই অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তার আগেই দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন শ্রীরাম। গত বছর এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি এ পদে কাজ করেছেন। অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী সাবেক স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার শ্রীরাম ভারতের হয়ে ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আটটি ওয়ানডে খেলেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন প্রায় ১৮ বছর। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন, সে সময়ই ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার স্পিন কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন শ্রীরাম। অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি আইপিএলেও কাজের অভিজ্ঞতা আছে শ্রীরামের। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস, দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি আরেক আইপিএল দল লখনৌ সুপারজায়ান্টসের কোচ। বলার অপেক্ষা রাখে না নিজ দেশের উইকেট ও ভেন্যু সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারে সাকিব আল হাসানের দলের জন্য। অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে সাকিব এই কোচের খুব প্রশংসা করেছিলেন। এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সাকিব অধিনায়ক। দু’জনের বোঝাপড়াটাও দারুণ।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবশেষ প্রস্তুতি বলতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। যদিও এই সিরিজে নেই দলের অনেক সেরা ক্রিকেটারই। কিন্তু এই সিরিজ থেকে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের দিকে চোখ বিসিবি ও টিমম্যানেজম্যান্টের। বিশেষ করে তামিম ইকবাল ইনজুরি থেকে ফিরেছেন। সাকিব অধিনায়ক ও দেশসেরা ওপেনারের জন্য কিউইদের বিপক্ষে নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার পালা। কতটা ফিট আছেন আর ফর্মে ফিরতে পারবেন এটি প্রমাণ করাও তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উৎড়ে গেলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ওপেনিং নিয়ে চিন্তা কমে আসবে কিছুটা হলেও। অন্যদিকে এই সিরিজ অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্যও অগ্নিপরীক্ষা। গুঞ্জন রয়েছে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে যাওয়ার টিকিট মিলতে পারে এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে ফিট প্রমাণ করতে পারলে হয়তো সুযোগ মিলবে তার। যদিও যতটা জানা গেছে মূল স্কোয়াডে না হলে তাকে ব্যাকআপ ক্রিকেটার হিসেবে দলের সঙ্গে নেয়া হতে পারে ভারতে।
এছাড়াও সৌম্য সরকারকে দলে ফেরাতে মরিয়া বিসিবি। কিন্তু এইচপি, ‘এ’ দলের টুর্নামেন্টগুলোতে তার ব্যাট হাসেনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাই তার দিকেও কড়া নজর রাখছে বিসিবি। যদিও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রিয় ক্রিকেটার বলেই তাকে বার বার সুযোগ দেয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। মূলত ৭ নাম্বার পজিশনে বাংলাদেশের একজন অলরাউন্ডার প্রয়োজন। সেখানে শেষ পর্যন্ত সৌম্য নাকি মাহমুদউল্লাহ তা দ্রুতই জানা যাবে। এরই মধ্যে বিসিবি জানিয়ে দিয়েছে কিউইদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের পরই টাইগারদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করা হবে।