যে ডাল খেলে দ্রুত ওজন কমে

বেশির ভাগ মানুষ বাড়তি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন। তবে খাওয়াদাওয়া একেবারে বন্ধ করে কিংবা কঠোর ডায়েট করে ওজন কমানো উচিত নয়। কাজটি করতে হবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে।

আপনি চাইলে ওজন কমাতে জিমে যান, ডায়েট করেন, হাঁটা, দৌড়ানো ইত্যাদি যেকোনো কাজ করতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন এসব কাজের পাশাপাশি আপনার একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকাও দরকার। আর এ খাদ্য তালিকায় আপনার পরম বন্ধু হতে পারে মসুর ডাল।

চলুন জেনে নিই মসুর ডালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

মসুর ডাল জটিল কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, এটি আপনার বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং শরীরের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। মসুর ডাল ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও মসুর ডাল ফোলেট এবং ম্যাগনেসিয়ামের একটি অসামান্য উৎস।

এক কাপ মসুর ডালের মধ্যে রয়েছে: ১৮ গ্রাম প্রোটিন, ৪০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, চর্বি এক গ্রামের কম, ১৬ গ্রাম ফাইবার ও ২৩০ ক্যালোরি।

আপনি যদি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মসুর ডাল খেতে পারেন তাহলে সহজেই আপনার ওজন কমবে। পুষ্টিবিদদের মতে, মসুর ডাল প্রোটিনের সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ। তাই যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য অপরিহার্য। এই ডালে বেশি ফাইবার এবং কম পরিমাণে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট থাকে।

চলুন জেনে নিই কীভাবে মসুর ডাল ওজন কমায়?
মসুর ডালে কম ফ্যাট এবং কম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এর উচ্চ ফাইবার সামগ্রী হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, যা ওজন কমাতে উপকারী প্রভাব ফেলে। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর মসুর ডাল প্রোটিনের ভান্ডার। এক কাপ মসুর ডালে ১০ গ্রাম প্রোটিন এবং ৬ গ্রাম ফাইবার থাকে। ওজন কমানোর জন্য ফাইবার অপরিহার্য। কারণ এটি হজমকে উৎসাহিত করে।

এ ছাড়া মসুর ডাল খেলে স্থূলতার ঝুঁকি কমায়। এই ডালে বেশি ফাইবার পাওয়া যায়, যা আপনার পেট ভরা রাখে এবং ওজন বাড়ায় এমন জিনিস খাওয়া থেকে আপনাকে বিরত রাখে।

ওজন কমাতে যেভাবে মসুর ডাল খাবেন
মসুর ডাল রান্নার আগে অন্তত ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এই উপায়ে পুষ্টি বেশি পাওয়া যায়। ওজনও কমে। ডাল ও তড়কা হিসাবে খাওয়া ছাড়াও মসুর ডাল কাবাব, বিরিয়ানি বা পোলাও তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন।

মসুর ডালের স্বাস্থ্য উপকারিতা কি?
মসুর ডাল খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। যেহেতু এই ডালে প্রোটিন বেশি এবং চর্বি কম, তাই মসুর ডাল মাংসের একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে। এ ছাড়া এই ডাল খেলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। মটরশুঁটিতে এমন কিছু থাকে যা মাংসে ফাইটোকেমিক্যালের অভাব থাকে। ফাইটোকেমিক্যালগুলি কোষের ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিকেলগুলির ক্রিয়াকে ব্লক করতে সাহায্য করে, যা ক্যান্সার থেকে পারকিনসনের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের কারণ হতে পারে। এ ছাড়াও মসুর ডালে পাওয়া ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস করে।

কালো মসুর ডাল
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা অনুসারে, কালো মসুর ডাল আয়রনের একটি ভালো উৎস, যা অক্সিজেন পরিবহন এবং শক্তি উৎদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালো মসুর ডালে ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং বি ভিটামিন রয়েছে, যা একটি স্বাস্থ্যকর বিপাক বজায় রাখতে এবং বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে সমর্থন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সবুজ মসুর ডাল
সবচেয়ে সহজলভ্য হচ্ছে সবুজ মসুর ডাল। ডিসকভারি হেলথের মতে, যারা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন তাদের জন্য মসুর ডাল একটি ভালো খাদ্য। কেননা এটি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই কারণেই মসুর ডাল ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ক্যান্সার এবং হৃদরোগ ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।