ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে সহায়তা করবে তিনটি পানীয়

ওজন কমাতে মানুষ কী না করে! তিনবেলার খাওয়ার রুটিন কমিয়ে কখনো কখনো একবেলায় নিয়ে আসে। ভাত-রুটি-চিনি বাদ দিয়ে শুধু প্রোটিন-নির্ভর ডায়েট অনুসরণ করে। জিমে দিন-রাত শারীরিক কসরত করে ঘাম ঝরায়। উপবাস করতেও দেখা যায় অনেককে। কিন্তু গত ২-৩ বছর ধরে এক বিশেষ ধরনের উপবাস স্বাস্থ্য-সচেতন মানুষদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনকি অনেক তারকাদেরও এই ধরণের উপবাসের গুণ গাইতে দেখা গেছে। সে তালিকায় হিউ জ্যাকমান, ক্রিস হেমসওয়ার্থ থেকে শুরু করে রয়েছে ইলন মাস্কের নামও।

ঘড়ি ধরে উপবাস ও পুনরায় খাবার খাওয়ার এ ফলপ্রসূ ডায়েটকে বলা হয় ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। এ ডায়েটে আপনাকে দিনে নির্দিষ্ট একটি ফাস্টিং উইন্ডো মেনে চলতে হবে। সেটা হতে পারে ১৬:৮, ১৪:১০, ১২:১২ ঘন্টার শিডিউল। অর্থাৎ, এর মাঝে কয়েক ঘন্টা আপনাকে খেয়ে এবং বাকি সময়টুকুতে উপোস করে কাটাতে হবে।

এর মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ১৬:৮ ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট প্ল্যান। এ প্ল্যান অনুযায়ী, আপনি দিনে ৮ ঘন্টা খাওয়ার সুযোগ পাবেন। বাকি ১৬ ঘন্টা তরল পানীয় খেয়ে কাটাতে হবে। এ সময়টায় ক্যালরিবিহীন পানীয় পান করতে হবে। আপনি চাইলে সপ্তাহের ৫ দিন সাধারণ খাবার খেয়ে আর বাকি দুইদিন উপোস করেও এ ডায়েটটি চালিয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে উপোসের দুই দিন সম্পূর্ণ ক্যালরিবিহীন পানীয়র ওপর নির্ভর করে কাটাতে হবে। বিষয়টা একটু জটিল মনে হলেও, অনেকেই এ ডায়েট থেকে আশানুরূপ ফল পেয়েছেন।

এ পর্যায়ে এসে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, শুধু পানি পান করে এতোটা সময় কাটিয়ে দেয়া কিনা। কিন্তু সুখবর হলো- শুধু পানি না, চিনি বিহীন কম ক্যালরিযুক্ত পানীয়গুলো এ সময়টায় পান করা যাবে।

ফাস্টিং চলাকালে পান করা যাবে এরকম কিছু পানীয়র সন্ধান দেয়া হলো-

কফি
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় দিনের শুরুটা আপনি কী দিয়ে করতে চান? অনুমান করে বলা যায়, বেশিরভাগের উত্তরই হবে- কফি। তাই কফিপ্রেমীরা এ ডায়েট বেছে নিলে নিশ্চিন্ত থাকুন, আপনার পছন্দের পানীয়কে বাদ দিতে হচ্ছে না। কিন্তু দুধ চিনি বাদ দিয়ে শুধু ব্ল্যাক কফি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক কাপ ব্ল্যাক কফিতে থাকে ৩ ক্যালরি, সঙ্গে অল্প পরিমাণে প্রোটিন, চর্বি এবং খনিজ। তবে মিষ্টি স্বাদের জন্য চিনির বদলে স্টেভিয়া বা জিরো ক্যাল ও ক্যালোরিবিহীন ফ্লেভার ব্যবহার করা যাবে।

লেবু-পানি
উপোসের সময় লেবুর টক স্বাদ আপনার ক্লান্ত হয়ে পড়া টেস্টবাডকে প্রশান্তি দিবে। মজার এ পানীয়তে ক্যালরি নেই বললেই চলে। আপনার বাড়ন্ত ইন্সুলিনেও প্রভাব ফেলবে না। উপোসের সময় আপনার ক্ষুধার অনুভূতি কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে লেবু। এছাড়াও, পানীয়তে হালকা ফ্লেভারিং যুক্ত করতে চাইলে ১ টেবিল-চামোচ পর্যন্ত ফলের রস ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ফাস্টিং-এর ক্ষতি হবে না।

গ্রিন টি
স্বাদে তিতকুটে গ্রিন-টি কিন্তু আপনার ডায়েট করা শরীরের জন্য উপকারী। এতে থাকা বায়োএকটিভ উপাদান মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। অর্থাৎ আপনার বিপাক প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তুলবে। বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্যকর পানীয় হল গ্রিন টি। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উদ্ভিদ-ভিত্তিক যৌগ এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এগুলো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেক বিশেষজ্ঞ এমনও বলেন যে, প্রতিদিন গ্রিন টি খেলে তা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।