যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর জন্য বিভিন্ন মহলের শোকের নিন্দা

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিবৃতি

’৭১-এর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মৌলবাদী ধর্ষক দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুর পর বেশ কিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, এমপিওভুক্ত শিক্ষক, পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন নিম্ন আদালতের বিচারকের সাঈদীপ্রীতি আমাদের অত্যন্ত বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে।
‘আমরা গণমাধ্যমসূত্রে জেনেছি-বিভিন্ন জেলায় ছাত্রলীগের প্রায় দেড়শ স্থানীয় নেতাকর্মী সাঈদীর বন্দনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকবার্তা প্রচার করেছেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রশংসনীয় হলেও ছাত্রলীগে জামায়াত-শিবিরের অনুপ্রবেশ ও অবস্থানে আমরা উদ্বিগ্ন। বিএনপির নেতা ও সমর্থকরা ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করবেন এটা স্বাভাবিক, কারণ বিএনপির শীর্ষনেতা তারেক রহমান বলেছেন স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াত হচ্ছে বিএনপির সহোদর, কিন্তু আওয়ামী লীগের কারও জামায়াতপ্রেম নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়।
‘জামালপুরের সরিষাবাড়ির এক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শোকসভা অনুষ্ঠানকালে সে স্কুলের ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক আকস্মিকভাবে খুনি-ধর্ষক সাঈদীর জন্য প্রার্থনা করেছেন। আর সে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে সাফাই বক্তব্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনিও এই ঘৃণ্য অপরাধীদের দলভুক্ত।
‘রাজশাহীর একজন পুলিশ পরিদর্শক যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর প্রশংসায় বক্তব্য দেয়ার পর তাকে বান্দরবান বদলি করা হয়েছে, যা আমরা যথেষ্ট শাস্তি বলে মনে করি না। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাকে চাকুরিচ্যুত এবং ফৌজদারি অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করাই হচ্ছে আইনের শাসনের দাবি। আরো বেশি শংকিত হয়েছি যখন আমরা জেনেছি যে মিলটন হোসেন, পঞ্চগড় জেলায় কর্মরত অতিরিক্ত প্রধান বিচারিক হাকিম সেই খুনি ধর্ষকের প্রশংসা করে বার্তা দিয়েছেন, যাকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক জঘন্যতম অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। যে অপরাধীকে সর্বোচ্চ আদালত সাজা দিল, একজন নিম্ন আদালতের বিচারক কিভাবে তার প্রশংসা করতে পারেন, তা আমরা বুঝতে অক্ষম। আরো বড় প্রশ্ন হচ্ছে এই ব্যক্তি বিচারকের দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না?
‘বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি যিনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, তাঁর কাছে আমাদের অনুরোধ- এসব অভিযোগ তদন্ত করে, সেই বিচারক এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায় অগ্রাহ্যকারী অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
স্বাক্ষরদাতা-
বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, জননেতা ঊষাতন তালুকদার, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক ডাঃ কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অবঃ) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অবঃ) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশীদ (অবঃ), অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন, ড. নূরন নবী, লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, আবৃত্তিশিল্পী মোঃ শওকত আলী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ডাঃ শেখ বাহারুল আলম, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ডাঃ ইকবাল কবীর, সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, সমাজকর্মী শফিকুর রহমান শহীদ, এডভোকেট আবদুস সালাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, এডভোকেট আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বড়ুয়া, সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই ফেরদৌসী লাকী, অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব, লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি, অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ডাঃ নুজহাত চৌধুরী শম্পা, লেখক আলী আকবর টাবী, এডভোকেট কাজী মানছুরুল হক খসরু, এডভোকেট দীপক ঘোষ, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন, শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর, শহীদসন্তান শমী কায়সার, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন, মানবাধিকারকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, লেখক-সাংবাদিক সাব্বির খান, মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমদ উল্লাহ, মানবাধিকারকর্মী স্বীকৃতি বড়ুয়া, এডভোকেট আবদুল মালেক, লেখক কলামিস্ট মিথুশিলাক মুর্মু, কলামিস্ট অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীন, মানবাধিকারকর্মী রহমান খলিলুর, সমাজকর্মী হারুণ অর রশীদ, এডভোকেট মালেক শেখ, সহকারী অধ্যাপক তপন পালিত, সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, সমাজকর্মী রাশেদুল ইসলাম, সমাজকর্মী ইস্রাফিল খান বাপ্পি, সমাজকর্মী শিমন বাস্কে, সমাজকর্মী শেখ আলী শাহনেওয়াজ পরাগ, সমাজকর্মী সাইফ উদ্দিন রুবেল, লেখক ও চলচ্চিত্রনির্মাতা শাকিল রেজা ইফতি, সমাজকর্মী ফয়সাল হাসান তানভীর প্রমুখ।